চীনের ওপর সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞায় মিত্রদের পাশে চায় যুক্তরাষ্ট্র
ইউক্রেন-রুশ আগ্রাসনের বিষয়ে এখনও কোনো অবস্থানে যায়নি চীন। পশ্চিমা দেশগুলো মস্কোর ওপর নিষেধাজ্ঞা দিলেও এ বিষয়ে চুপ বেইজিং। যদিও রুশ জ্বালানি আমদানিতে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে তারা। এদিকে, যুদ্ধে এগিয়ে যেতে চীন রাশিয়াকে সামরিক সহায়তা দেবে বলে চাওর হচ্ছে খবর। এ নিয়ে বেইজিংকে হুঁশিয়ারও করেছে ওয়াশিংটন। বলেছে, রাশিয়াকে অস্ত্র দিলে চীনের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা দেবে তারা। এমনকি, নিষেধাজ্ঞার দেওয়ার জন্য ঘনিষ্ঠ মিত্রদেরও পাশে চাইছে দেশটি। তবে, চীন তা অস্বীকার করেছে।
চারজন মার্কিন কর্মকর্তা ও সূত্রের বরাতে আজ বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়ে রয়টার্স। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে এগিয়ে যেতে সামরিক সহায়তা দিলে চীনের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞায় ঘনিষ্ঠ মিত্রদের পাশে দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র।
সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞার জন্য যেসব পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, তা এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। তবে, নিষেধাজ্ঞায় শিল্পোন্নত দেশগুলোর জোট জি–৭-কে পাশে চাইছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে, ওয়াশিংটন বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে কী ধরণের নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাব দেবে তা এখনও স্পষ্ট করা যায়নি।
যুক্তরাষ্ট্র যখন কোনো দেশ, প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেয়, তখন তা হোয়াইট হাউস ও ট্রেজারি ডিপার্টমেন্টের পক্ষ থেকে বেশি আসে। তবে, চীনের ওপর সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞা নিয়ে এই দুই স্থান থেকে এখনও কিছু বলা হয়নি।
রয়টার্স বলছে, সপ্তাহখানেক আগ থেকে ওয়াশিংটন ও তার ঘনিষ্ঠ মিত্ররা দাবি করছেন, বেইজিং মস্কোকে অস্ত্র দেওয়ার কথা ভাবছে। তবে, বিষয়টি অস্বীকার করে আসছে তারা। এ নিয়ে চীনকে সতর্ক করছে ওয়াশিংটন।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি বৈশ্বিক নিরাপত্তা সম্মেলন হয়েছে মিউনিখে। সেই বৈঠকে অংশ নিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং। ওই সম্মেলনে রাশিয়াকে অস্ত্র দেওয়া নিয়ে চীনকে সরাসরি সতর্ক করে যুক্তরাষ্ট্র।
বিষয়টির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্ররা রয়টার্সকে বলেন, ‘রাশিয়ার প্রতি চীনা সমর্থন মোকাবিলায় বাইডেন প্রশাসন তৎপর রয়েছে। তাদের প্রাথমিক পদক্ষেপের মধ্যে রয়েছে কূটনৈতিক স্তরে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা।’
ওই সূত্ররা আরও বলেছেন, ‘গত এক বছরে যেসব দেশ সবচেয়ে বেশি রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সেই গ্রুপটিকে চাইছে যুক্তরাষ্ট্র। চীনের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞায়ও তাদের সহায়তা চায় তারা।’
এ বিষয়ে ওয়াশিংটনের এক পরামর্শদাতা বলেন, ‘সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি এখনও গ্রাউন্ড লেভেলে রয়েছে। গোয়েন্দা তথ্যগুলো মিত্রদের দেখাচ্ছে ওয়াশিংটন।’
গত শুক্রবার হোয়াইট হাউসে জার্মান চ্যান্সেলর ওলফ শলৎসের সঙ্গে বৈঠক করেন বাইডেন। ওই বৈঠকে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে চীনের ভূমিকা নিয়ে অনেক আলোচনা হয়। এর আগে গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার ভারতে চলা জি-২০ সম্মেলনেও কূটনৈতিকরা যুদ্ধ নিয়ে বেশ আলোচনা করেছেন।