দ্বিতীয় ধাপে গড়াল তুরস্কের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কোনো প্রার্থীই প্রয়োজনীয় ৫০ শতাংশ ভোট পাননি। এর ফলে দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচন গিয়ে ঠেকল দ্বিতীয় ধাপে (রান অফ)। দেশটির প্রধান নির্বাচনী কর্মকর্তা আহমেত ইয়েন এই তথ্য জানিয়েছেন। আজ সোমবার (১৫ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আল-জাজিরা।
দেশটির নির্বাচন কমিশন বলছে, ‘রোববারের ভোটে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ৪৯ দশমিক পাঁচ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। তার প্রদান প্রতিদ্বন্দ্বী কেমাল কিলিকদারোগলু ৪৪ দশমিক ৮৯ শতাংশ পেয়েছেন।’
দেশটির নিয়ম অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট পদে জিততে একজন প্রার্থীকে এই পদে পড়া মোট ভোটের অর্ধেকের বেশি পেতে হয়। এই আইনটি ২০১৮ সালে প্রবর্তন করেন এরদোয়ান। ওই বছরের জুলাইয়ে একে পার্টির এরদোয়ান দেশটির প্রেসিডেন্ট পদে জয়ী হন। এর এক মাস পরে প্রধানমন্ত্রী শাসিত সংসদীয় রাষ্ট্রব্যবস্থা থেকে সরে আসে, চালু হয় প্রেসিডেন্ট শাসিত রাষ্ট্রব্যবস্থা। এই ব্যবস্থায় প্রতি পাঁচ বছর পর একইদিনে প্রেসিডেন্ট ও সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
প্রেসিডেন্ট পদে জয়ী হতে হলে এই পদে মোটপ্রাপ্ত ভোটের অর্ধেকের বেশি ভোট প্রার্থীকে পেতে হয়। কেউ যদি এই পরিমাণ ভোট না পান, তাহলে সর্বোচ্চ ভোট প্রাপ্ত দুই প্রার্থীকে দ্বিতীয় ধাপের (রান অফ) জন্য অপেক্ষা করতে হয়। আর সেটি অনুষ্ঠিত হয় দুই সপ্তাহ পরে। সেই অনুযায়ী, এবার দ্বিতীয় ধাপের ভোট হবে আগামী ২৮ মে।
এর আগে, গতকাল রোববার তুরস্কের স্থানীয় সময় সকাল ৮টা থেকে ভোট শুরু হয়, যা শেষ হয় বিকেল ৫টায়। এরপরে শুরু হয় ভোট গণনা। পরে, শুরু হয় প্রাথমিক ফলাফল ঘোষণা। এর জন্য দেশটির একটি আইনও পরিবর্তন করে তুরস্কের নির্বাচন বোর্ড। প্রাথমিক ফলাফলে প্রথমে এরদোয়ান এগিয়ে থাকলেও ভোট গণনা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পাল্টে যেতে থাকে পটভূমি। অবশেষে ভোট গণনা শেষ হলে ৫০ শতাংশ ভোটের কোটা পূরণে ব্যর্থ হন ২০ বছর ধরে তুরস্কের মসনদে থাকা এরদোয়ান।
এদিকে, ভোট গণনায় ও ফলাফল প্রকাশে এরদোয়ানের রাজনৈতিক দল একে পার্টি হস্তক্ষেপ করেছে বলে অভিযোগ করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী রিপাবলিকান পিপলস পার্টির (সিএইচপি) কিলিকদারোগলু। একইসঙ্গে দ্বিতীয় ধাপের ভোটে জয়ী হওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ছয় দলীয় জোটের এই শীর্ষ নেতা। কিলিকদারোগলু বলেন, ‘এরদোয়ানের দল গণনা এবং ফলাফলের প্রতিবেদন তৈরিতে হস্তক্ষেপ করেছে।’ এ সময় নিজের সমর্থকদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানান তিনি।
আল-জাজিরা জানিয়েছে, এবারসহ তিনবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো তুরস্কে। এর মধ্যে প্রথম দুটিতে সরাসরি জিতেছিলেন এরদোয়ান। এবার পড়লেন রান অফে। এই রান অফের আগে দীর্ঘ সময় পার্লামেন্টের দিকে। কোন রাজনৈতিক জোট পার্লামেন্ট নিয়ন্ত্রণ করবে, সে বিষয়টি সামনে রেখে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নির্ধারিত হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
তুরস্কের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আনাদুলা এজেন্সির বরাতে কাতারভিত্তিক গণমাধ্যমটি জানায়, ৬০০ আসনের পার্লামেন্ট নির্বাচনে একে পার্টি পেয়েছে ২৬৬টি ও সিএইচপি পেয়েছে ১৬৬টি।