রাজনীতিকে ‘বিদায়’ বলে দিলেন বাবুল সুপ্রিয়
রাজনীতির আঙিনাকে ‘কার্যত বিদায়’ বলে দিলেন বিজেপির সংসদ সদস্য তথা গায়ক বাবুল সুপ্রিয়। পশ্চিমবঙ্গের আসানসোল কেন্দ্রের এই সংসদ সদস্য কদিন আগেই নিজের ফেসবুক পোস্টে এ ব্যাপারে আভাস দিয়েছিলেন। আজ শনিবার আবার এক পোস্ট করে সেই আভাসকেই সত্যের দিকে ঠেলে দিলেন বাবুল সুপ্রিয়।
গায়ক লিখলেন, ‘আমি আমার মতো করেই বলছি, চললাম…।’ সঙ্গে ছিল হেমন্ত মুখার্জির বিখ্যাত সেই গানের কলি, ‘এক গোছা রজনীগন্ধা হাতে নিয়ে বললাম, চললাম’ গানের লিঙ্ক। পোস্টের ছত্রে ছত্রে অভিমানের ছাপ স্পষ্ট।
শুরুতেই বাবুল সুপ্রিয় লিখেন, “চললাম… আলবিদা। সবার সব কথা শুনলাম, বাবা-মা, স্ত্রী, কন্যা, দু-একজন প্রিয় বন্ধুবান্ধব.. সবটুকু শুনে বুঝেই অনুভব করেই বলি, চললাম। বেশ কিছু সময়ে তো থাকলাম… কিছু মন রাখলাম কিছু ভাঙলাম… কোথাও আপনাদের হয়তো আমার কাজে খুশি করলাম, কোথাও নিরাশ হতাশ করলাম। মূল্যায়ন আপনারাই নয় করবেন। আমি ‘আমার’ মনে ওঠা সব প্রশ্নের জবাব দেওয়ার পরই বলছি… আমার মতো করেই বলছি… চললাম।”
এই পোষ্টের পাশাপাশি বাবুল সুপ্রিয় আরও লিখেছেন, ‘সমাজসেবা করতে গেলে রাজনীতিতে না থেকেও করা যায়।’ সেইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, সংসদ সদস্য পদ থেকেও ইস্তফা দেবেন।
এর আগেও রাজনীতি ছাড়ার অনুরোধ করে প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছেন বাবুল সুপ্রিয়। তিনি বলেন, ‘বিগত কয়েকদিনে বার বার মাননীয় অমিত শাহ ও মাননীয় নাড্ডাজির কাছে রাজনীতি ছাড়ার সংকল্প নিয়ে গেছি এবং আমি ওঁদের কাছে চিরকৃতজ্ঞ যে প্রতিবারই ওঁরা আমাকে নানাভাবে অনুপ্রাণিত করে ফিরিয়ে দিয়েছেন।’
তবে রাজনীতি ছাড়া নিয়ে বাবুল সুপ্রিয় আজ যে ফেসবুক পোস্ট দিয়েছেন সেটি যে অভিমান থেকে তা স্পষ্ট। নিজের ঘনিষ্ঠমহলে তেমনই জানিয়েছেন প্রাক্তন এই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, পশ্চিমবাংলায় বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সঙ্গে মতবিরোধের জের ধরে এই ঘটনা ঘটতে পারে।
বাবুল সুপ্রিয় আরও জানিয়েছেন, তিনি সর্বপ্রথম সংসদ সদস্যপদ থেকে ইস্তফা দেবেন। তা তিনি ঠিক করে ফেলেছেন। বাবুলের ঘনিষ্ঠরা বলছেন, কারণ, এর আগেও বিজেপির প্রথমসারির নেতারা ওকে রাজনীতি ছাড়তে বারণ করেছেন। কিন্ত বাবুল নিজের মতোই সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছেন।
পর পর দুটি লোকসভা ভোটে জেতেন বাবুল সুপ্রিয়। কেন্দ্রে মন্ত্রীও হন দুই দফায়। কিন্তু বাংলায় বিধানসভা ভোটে প্রার্থী হওয়ার পর থেকেই বাবুলের সঙ্গে রাজ্য নেতৃত্বের একাংশের সংঘাত শুরু হয়। বিধানসভা নির্বাচনে পরাজিত হন তিনি।