৯০ দিনে সাধারণ নির্বাচন সম্ভব নয় : পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন
প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব বাতিল ও পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার পর যে জটিলতা তৈরি হয়েছে, এই পরিস্থিতিতে আগামী তিন মাসেও দেশটিতে সাধারণ নির্বাচন সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন (ইসিপি)।
এর কারণ হিসেবে নির্বাচন আয়োজনের নানা বাধা ও প্রক্রিয়াগত চ্যালেঞ্জের কথা জানিয়েছে তারা।
কমিশনের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে দেশটির সংবাদমাধ্যম দ্য ডন জানিয়েছে, সাধারণ নির্বাচনের প্রস্তুতির জন্য ছয় মাস সময় লাগবে। নির্বাচনী এলাকার নতুন সীমা নির্ধারণ, বিশেষ করে ২৬তম সংশোধনীর মাধ্যমে খাইবার পাখতুনখোয়ায় আসন সংখ্যা বৃদ্ধি এবং জেলা ও নির্বাচনী এলাকাভিত্তিক ভোটার তালিকাগুলো সামঞ্জস্যপূর্ণ করা প্রধান চ্যালেঞ্জ।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনী সীমা নির্ধারণ একটি সময়সাপেক্ষ ব্যাপার, যেখানে আইনে এ ব্যাপারে শুধু আপত্তি জানানোর জন্যই এক মাস সময় দেওয়া হয়েছে।
‘আপত্তি জানানোর পর তা যাচাই-বাছাইয়ে আরও এক মাস প্রয়োজন। আর এই পুরো প্রক্রিয়া শেষ করতে কমপক্ষে তিনমাস সময় লাগতে পারে। তারপর ভোটার তালিকা হালনাগাদের মতো আরেকটি বিশাল কাজ বাকি থাকে।’
ইসিপির ওই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বরাতে ডন জানিয়েছে, পাকিস্তানে নির্বাচন আয়োজনের ক্ষেত্রে নির্বাচনী সামগ্রী সংগ্রহ, ব্যালট পেপারের ব্যবস্থা এবং ভোটগ্রহণ কর্মীদের নিয়োগ ও প্রশিক্ষণও ভোট আয়োজনের চ্যালেঞ্জের মধ্যে রয়েছে।
ওই কর্মকর্তা বলেন, আইন অনুযায়ী ওয়াটার মার্ক সম্বলিত ব্যালট পেপার ব্যবহার করতে হবে যা পাকিস্তানে নেই, আমদানি করতে হবে। এই ‘ওয়াটার মার্কের’ পরিবর্তে ‘নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য’ রয়েছে এমন ব্যালট পেপার সরবরাহের জন্য আইন সংশোধনের প্রস্তাব করেছিল নির্বাচন কমিশন।
দরপত্র আহ্বান, আর্থিক ও প্রযুক্তিগত বিষয়গুলো যাচাইয়ের জন্যও কিছু সময় লাগবে। প্রায় ১ লাখ ভোট কেন্দ্রের জন্য প্রায় দুই মিলিয়ন স্ট্যাম্প প্যাডের প্রয়োজন হবে।
কিছু আইনি ঝামেলার কথা উল্লেখ করে ডনকে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘নির্বাচন আইনের ১৪ ধারা অনুসারে ভোট গ্রহণের চার মাস আগে একটি নির্বাচনী পরিকল্পনা ঘোষণা করতে হয় ইসিপিকে। ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করা এবং বিদেশি পাকিস্তানিদের ভোটাধিকারের বিষয়গুলোও সুরহা করতে হবে।
এদিকে কমিশন এরই মধ্যে বেলুচিস্তানে স্থানীয় সরকার (এলজি) নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে। সেখানে ২৯ মে ভোটগ্রহণ হবে। পাঞ্জাব, সিন্ধু এবং ইসলামাবাদেও স্থানীয় সরকার নির্বাচনের প্রক্রিয়া চলছে।
তিনি বলেন, ‘যদি সাধারণ নির্বাচন পরিচালনা করতে হয়, তাহলে আমাদের স্থানীয় সরকার নির্বাচনের পরিকল্পনা বাদ দিতে হবে।’