পশ্চিমবঙ্গের আদালতে নূর হোসেনকে তোলা হচ্ছে আজ
নারায়ণগঞ্জে সাত খুন মামলার অন্যতম প্রধান আসামি নূর হোসেনকে আজ শুক্রবার আবারো ভারতের পশ্চিমবঙ্গের আদালতে তোলা হবে। এদিন সকালে তাঁর আইনজীবী অনুপ কুমার ঘোষ বিষয়টি জানিয়েছেন। মামলাটির অপর দুই আসামি হলেন নূর হোসেনের দুই সহযোগী খান সুমন ও ওহাদুজ্জামান শামীম।
অনুপ কুমার ঘোষ জানান, দিনের দ্বিতীয়ার্ধে এ মামলা বারাসাত আদালতে উঠবে। এর আগে বারাসাত আদালতে নূর হোসেনের বিরুদ্ধে সরকারের তরফে মামলা তুলে নেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছিল। এরই পরিপ্রেক্ষিতে নূর হোসেন শুনানির আবেদন করেন। ৩ অক্টোবর শুনানি হওয়ার কথা ছিল। সেদিন চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অনুপস্থিত থাকায় ওই দিন পিছিয়ে যায় নূর হোসেনের শুনানি। পরবর্তী দিন ধার্য হয় ১৬ অক্টোবর।
এ মামলার সরকারি আইনজীবী শান্তিময় বসু জানান, পশ্চিমবঙ্গ সরকার ৩২১ ধারায় একটি পিটিশন দাখিল করে। যে পিটিশনে নূর হোসেনের বিরুদ্ধে যাবতীয় মামলা প্রত্যাহার করে নিতে চায় সরকারপক্ষ।
অনুপ ঘোষ জানান, সরকার নূর হোসেনের বিরুদ্ধে ভারতে অনুপ্রবেশের মামলা দায়ের করার পর এখন মামলা তুলে নিতে চাইছে। কী কারণে এই মামলা তুলে নেওয়া হবে এবং নূর হোসেনের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে, সেটা স্পষ্ট করার দাবিতেই এই শুনানির আবেদন করা হয়েছে। তিনি জানান, নূর হোসেনের এরই মধ্যে এক বছরের ওপর জেল খাটা হয়ে গেছে।
এদিকে, সরকার নূর হোসেনের বিরুদ্ধে ভারতে অনুপ্রবেশের মামলা তুলে নেওয়ার কারণ হিসেবে বারাসাত আদালতের একাধিক আইনজীবী মনে করছেন, মামলা তুলে নেওয়ার পরেই নূরকে বাংলাদেশের হাতে তুলে দেওয়া অনেকটা সহজ হয়ে যাবে। যেহেতু নূর হোসেনের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারি আছে, সেহেতু ভারত-বাংলাদেশ বন্দিবিনিময় চুক্তি মেনেই নূরের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রত্যাহার করা হলে তাঁকে খুব সহজে বাংলাদেশের হাতে প্রত্যর্পণ করা যাবে। এ ছাড়া ভারতীয় দণ্ডবিধির নিয়ম অনুযায়ী নূরকে ভারতে অনুপ্রবেশের অপরাধের সাজা খেটে তবেই বাংলাদেশে ফেরত যেতে হবে। নূর হোসেন বর্তমানে দমদম সেন্ট্রাল জেলে বন্দি রয়েছেন। নূরের বিরুদ্ধে ভারতে অনুপ্রবেশের মামলা থাকায় তাঁকে সেই মামলার আইনি প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের হাতে প্রত্যর্পণ করতে নানা জটিলতার সৃষ্টি হচ্ছিল।
২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ শহরের কাছ থেকে পৌর কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজনকে অপহরণ করেন র্যাব-১১-এর কতিপয় সদস্য। এর কয়েক দিন পর সাতজনেরই মৃতদেহ শীতলক্ষ্যা নদীতে পাওয়া যায়। এ ঘটনায় র্যাবের ঊর্ধ্বতন তিন কর্মকর্তাসহ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। নারায়ণগঞ্জ আদালতে তাঁদের বিচার চলছে।