আইএসআইয়ের সহায়তায় চলছে জেএমবির কার্যক্রম !
পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের সহায়তায় বাংলাদেশে জামায়াতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি)-এর কার্যক্রম চলছে। একই সঙ্গে তারা ভারতের পূর্বাঞ্চলে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করছে। ভারত ও বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এ কথা জানিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া।
বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, ভারতে গত কয়েক বছর ধরে আইএসআই যেভাবে কার্যক্রম চালিয়েছে, ঠিক একইভাবে এখন বাংলাদেশে কাজ করছে তারা। জেএমবিকে অর্থায়নের অভিযোগে চলতি বছরের জানুয়ারিতে মাজহার খান নামে পাকিস্তান হাইকমিশনের এক কর্মকর্তাকে বহিষ্কার করে বাংলাদেশ।
টাইমস অব ইন্ডিয়া প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, জম্মু ও কাশ্মীরে কার্যক্রম চালানো কঠিন হয়ে পড়ায় আইএসআইসের মনোযোগ এখন বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গে।
পরিচয় প্রকাশ না করে বাংলাদেশের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার বরাত দিয়ে টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, জেএমবি ও এর মতো সংগঠনগুলোর মাধ্যমে বাংলাদেশ ও ভারতের পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোতে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাইছে আইএসআই। পশ্চিমবঙ্গ এই লক্ষ্যের কেন্দ্রে। কারণ সম্প্রতি বাংলাদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গের মালদা, মুর্শিদাবাদ ও নদীয়ায় জঙ্গিদের খিলাফত প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়েছে জঙ্গিরা। আর জঙ্গি সংগঠনগুলোর সহিংসতা থেকে ভালোই লাভবান হবে আইএসআই ও পাকিস্তান। ঐতিহাসিকভাবে, বাংলাদেশের স্বাধীনতা পাকিস্তানের জন্য একটি গভীর ক্ষত। আর ভারত ও বাংলাদেশের সুসম্পর্ক এই ক্ষতের মধ্যে নুনের ছিটার মতো। এই অঞ্চলে ঝামেলা সৃষ্টি করে বাংলাদেশ ও ভারত উভয় দেশকেই ভোগানো যাবে, কারণ উত্তর ভারতের মতো এখানকার সীমান্তে অত কড়াকড়ি নেই।
টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, জানুয়ারিতে ঢাকাস্থ পাকিস্তান হাইকমিশনের কর্মকর্তা মাজহার খানকে বহিষ্কার করা হলেও সম্প্রতি বাংলাদেশের গোয়েন্দা জানতে পেরেছে, সেখানকার সেকেন্ড সেক্রেটারি (রাজনৈতিক) ফারিনা আরশাদও জেএমবি ও অন্যান্য জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন। আর বাংলাদেশের নিরাপত্তা সংস্থাগুলোতেও কিছু ফাঁকফোকরের আশঙ্কা আছে। কয়েক বছর আগেও বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআইয়ের সঙ্গে আইএসআইয়ের ভালো সম্পর্ক ছিল।
অপর একটি সূত্রের বরাত দিয়ে টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, বাংলাদেশের সরকারের উচ্চপর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য কৌশলে সংগ্রহের পরিকল্পনা করছে আইএসআই।
পরিচয় প্রকাশ না করে ভারতীয় এক গোয়েন্দা কর্মকর্তার বরাত দিয়ে টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, বাংলাদেশের পূর্বের সরকার ও ডিজিএফআইয়ের সঙ্গে পাকিস্তানের ভালো সম্পর্ক ছিল। তখন বাংলাদেশর সীমান্তে থাকা জঙ্গিদের ঘাঁটিতে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিত আইএসআই। এমনকি ভারতের আন্তর্জাতিক সীমান্তের কাছে আইএসআই শীর্ষ কর্মকর্তাদের পরিদর্শনের ব্যবস্থাও করেছিল ডিজিএফআই। আর ছাত্রশিবিরের মতো সংগঠনগুলো জঙ্গি ঘাঁটিতে সহায়তা পাঠাত। তবে বর্তমান সরকার বাংলাদেশের ক্ষমতায় আসার পর এসব কার্যক্রম সব বন্ধ হয়েছে। ২০১৪ সালে শেষে এবং ২০১৫ এর শুরুতে জেএমবি ও এর মতো সংগঠনগুলোর সহায়তায় বাংলাদেশি অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে নিজেদের অবস্থান আবার পোক্ত করতে চায় আইএসআই। তবে বাংলাদেশের র্যাব ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এসব অপচেষ্টা দমন করেছে। তবে এটিই শেষ নয়। অনেক জঙ্গি নেতা আত্মগোপনে চলে গেছেন, সুযোগ পেলেই তাঁরা আবার বেরিয়ে আসবেন।
বাংলাদেশের একটি সূত্রের বরাত দিয়ে টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, বাংলাদেশের একটি আন্দোলন সংগঠনের চেষ্টা করছে আইএসআই। এর মাধ্যমে ভারতবিরোধী মনোভাব সৃষ্টি করা হবে এবং জঙ্গিরা সংগঠিত হওয়ার সুযোগ পাবে। এটি বাংলাদেশ ও ভারত উভয় দেশের জন্যই আশঙ্কার।