বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনে ভূমিকা রাখতে ইইউতে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ৬ সদস্যের চিঠি
বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও সুষ্ঠুভাবে আয়োজনে ভূমিকা রাখতে এবার ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ছয় সদস্য ইউরোপীয় ইউনিয়নকে (ইইউ) চিঠি দিয়েছেন। ইইউর পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেলের উদ্দেশে গতকাল সোমবার (১২ জুন) এ চিঠি দেওয়া হয়। বাংলাদেশে গ্রহণযোগ্য কোনো নির্বাচন ব্যবস্থা নেই বলে অভিযোগ তোলা হয় ওই চিঠিটিতে।
চিঠি দেওয়া ছয় পার্লামেন্ট সদস্য হলেন–স্টেফানেক ইভান (স্লোভাকিয়া), মাইকেলা সোজড্রোভা (চেক প্রজাতন্ত্র), আন্দ্রে কোভাতচেভ (বুলগেরিয়া), কারেন মোলচিওর (ডেনমার্ক), জাভিয়ের নার্ট (স্পেন) ও হেইডি হাউটালা (ফিনল্যান্ড)।
চিঠিটিতে বলা হয়, কারচুপিসহ নানা কারণে এবং ভোটাররা অংশ না নেওয়ায় বাংলাদেশের দশম ও একাদশ সংসদ নির্বাচন ভালো হয়নি। দশম নির্বাচনও অংশগ্রহণমূলক ছিল না। প্রধান বিরোধী দল বিএনপি এটি বর্জন করে। একাদশ সংসদ নির্বাচনও প্রশ্নবিদ্ধ, যা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন পেতে ব্যর্থ হয়েছে।
চিঠিতে বাংলাদেশের মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে তা বন্ধ করা, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদ্যমান সংকটে সরকারের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনার মাধ্যমে টেকসই এবং গণতান্ত্রিক উপায়ে সমাধান খুঁজে বের করার কথা বলা হয়েছে। একইসঙ্গে ২০১৮ সালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাস করে সংবাদপত্রের স্বাধীনতাসহ মতপ্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব করা হয়েছে বলেও চিঠিতে অভিযোগ করা হয়।
চিঠিতে ইইউ নেতৃত্বের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলা হয়, কূটনৈতিক যোগাযোগের মাধ্যমে ইইউ নেতৃত্ব আইনের শাসন ও মানবাধিকার নিয়ে গোটা বিশ্বে কার্যক্রম চালিয়ে থাকে। আমরা বিশ্বাস করি, বাণিজ্য ও উন্নয়ন সহযোগিতার দীর্ঘদিনের অংশীদার হিসেবে বাংলাদেশের জনগণের পাশে দাঁড়ানোর জন্য ইইউর জোরদার কারণ রয়েছে। বাংলাদেশের সঙ্গে শুধু মানবাধিকার নিয়ে ধারাবাহিক আলোচনা চালিয়ে গেলেই হবে না, এর দৃশ্যমান অগ্রগতিও দেখাতে হবে।
চিঠিতে মানবাধিকার লঙ্ঘনে জড়িতদের ইইউ দেশগুলোতে প্রবেশে বিধিনিষেধ আরোপ এবং জিএসপি প্লাস সুবিধা পেতে শর্তগুলো মনে করিয়ে দেওয়ার মতো সম্ভাব্য ব্যবস্থার সুপারিশও করা হয়।
বাংলাদেশে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের বিষয়ে চিঠিতে বলা হয়, এ বছরের শেষে অথবা ২০২৪ সালের শুরুতে নির্বাচন হতে যাচ্ছে। জনগণের প্রতিনিধি নির্বাচনের অধিকার আছে, বিষয়টি আমাদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে। কিন্তু, এ অধিকার এখনও নিশ্চিত হয়নি।
এর আগে গত ২৫ মে বাংলাদেশ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে চিঠি দেন দেশটির কংগ্রেসের ছয় সদস্য। সেখানে বাংলাদেশের জনগণের জন্য অবাধ ও সুষ্ঠু সংসদ নির্বাচনের সুযোগ তৈরিতে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলা হয়।
এই বিষয়ে আজ মঙ্গলবার (১৩ জুন) রাজধানীর সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেছেন, বিএনপি হয়তো সেইসব পার্লামেন্ট সদস্যদের হাতেপায়ে ধরেছিল। তাদের অনুরোধ রক্ষা করতেই তারা চিঠি দিয়ে থাকতে পারেন। তবে আমরা এটিকে গুরুত্ব দিচ্ছি না।