১২০০ ফুট ওপরে এখনও ঝুলছে চারজন
পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের একটি দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় ক্যাবল কার ছিঁড়ে ঝুলে থাকা আটজনের মধ্যে চারজনকে উদ্ধার করা হয়েছে। প্রদেশটির ডেপুটি কমিশনার তারভীর উর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। তিনি বলেছেন, এ পর্যন্ত চারজনকে উদ্ধার করা হয়েছে। হেলিকপ্টার, রশির মাধ্যমে উদ্ধারকাজে পারদর্শি, সামরিক বাহিনীর সদস্যরা এই উদ্ধারকাজ পরিচালনা করে। এখন রাত হওয়ায় হেলিকপ্টারে উদ্ধারকাজ বন্ধ আছে। তবে, অভিযান চলছে।
এর আগে, স্থানীয় সময় আজ সকাল ৭টার দিকে খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় ক্যাবল কার ছিঁড়ে ঝুলে থাকে ছয় শিশুসহ মোট আটজন। আজ মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) দিনজুড়ে শূন্যে ঝুলেছিল তারা। আটকে পড়াদের উদ্ধারে চলছে অভিযান। অভিযানে ব্যবহার করা হচ্ছে সামরিক বাহিনীর হেলিকপ্টার। তবে, সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসায় উদ্ধার অভিযান নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
প্রতিবেদনে ফরাসি সংবাদ সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, স্কুলে যেতে ক্যাবল কারটি ব্যবহার করত স্থানীয় শিক্ষার্থীরা। আজ স্থানীয় সময় সকাল ৭টার দিকে এক হাজার ২০০ ফুট (৩৬৫ মিটার) উচ্চতায় থাকা অবস্থায় ক্যাবল কারটির একটি তার ছিঁড়ে যায়। যখন তারটি ছিঁড়ে যায়, তখন এটি মাঝপথে ছিল।
ঝুলন্ত অবস্থায় থাকা গুল ফারজ নামের এক প্রাপ্ত বয়স্ক মুঠোফোনে এএফপিকে বলেন, ‘সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছে। তাদের (কর্তৃপক্ষ) জিজ্ঞাসা করুন, কেন হেলিকপ্টার পেছনের দিকে যাচ্ছে। খোদার দোহায় আমাদের সাহায্য করুন।’
স্থানীয় কর্মকর্তা তানভীর উর রেহমান এএফপিকে বলেন, ‘বেশ কয়েকটি সামরিক হেলিকপ্টার উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে। একজন বিমানকর্মীকে খাবার, পানি এবং ওষুধ সরবরাহের জন্য রশি দিয়ে ক্যাবল কারের নিচে নামানো হয়েছিল।’ ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘অভিযানটি সূক্ষ্ম হতে হবে। হেলিকপ্টার ক্যাবল কারের কাছাকাছি যেতে পারে না। কারণ, হেলিকপ্টারে সৃষ্ট বাতাসে অন্য তারটিকে ছিঁড়ে যেতে পারে।’
এএফপি জানিয়েছে, দুর্গম আল্লাই উপত্যকায় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। ক্যাবল কারের তার ছেঁড়ার পর মসজিদের মাইকে স্থানীয় সবাইকে সতর্ক করা হয়। উদ্বিগ্ন জনতা পাহাড়ের উভয় পাশে জড়ো হয়েছে।
আল্লাই উপত্যকা এলাকার চেয়ারম্যান গুলামুল্লাহ জিও নিউজকে বলেন, ‘যতবার হেলিকপ্টার থাকা উদ্ধারকারীরা ক্যাবল কারের কাছে যায় ততবার বাতাসের জেরে ক্যাবল কারটি কাঁপতে থাকে। এতে করে শিশুরা ভয়ে চিৎকার করে ওঠে।’
খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সৈয়দ হাম্মাদ হায়দার বলেন, ‘ক্যাবল কারটি এক হাজার থেকে এক হাজার ২০০ ফুট উচ্চতায় ঝুলে আছে।’ পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী আনোয়ারুল হক কাকর সব জরাজীর্ণ ও ত্রুটিপূর্ণ ক্যাবল কার অবিলম্বে বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন। তার কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়।