যুদ্ধবিরতিতে আরও বন্দিবিনিময় করল হামাস-ইসরায়েল
গাজায় ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে চলা যুদ্ধবিরতি ষষ্ঠ দিনে পৌঁছেছে। যুদ্ধবিরতির পঞ্চম দিনে গতকাল মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) বন্দিদের মুক্ত করেছে দুপক্ষই। এরই মধ্যে মধ্যস্থতাকারীরা দুপক্ষকে চাপ দিচ্ছে দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধবিরতিতে যাওয়ার জন্য। খবর এএফপির।
প্রতিবেদনে ফরাসি সংবাদ সংস্থাটি জানিয়েছে, চার দিনের যুদ্ধবিরতি শেষে দ্বিতীয় দফায় আরও দুদিন এর মেয়াদ বাড়ানো হয়। দ্বিতীয় দফার যুদ্ধবিরতির প্রথম দিনেই ১২ বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। বিপরীতে ৩০ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েল।
দ্বিতীয় দফা চুক্তির শেষ ২৪ ঘণ্টা আজ বুধবার থেকে শুরু হয়েছে। এ দিনেও বন্দি বিনিময় হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। তবে মধ্যস্থতাকারী কাতার বলেছে, তারা আরও দীর্ঘস্থায়ী ব্যবস্থার আশা করছে।
কাতারের দোহায় এক সংবাদ সম্মেলনে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল আনসারি বরেন, ‘বর্তমানে আমাদের মূল লক্ষ্য ও আশা হলো, একটি টেকসই যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানো, যেটি কি না পরবর্তী আলোচনার দিকে নিয়ে যাবে ও যুদ্ধ শেষ করবে।’ এই মুখপাত্র বলেন, ‘যাইহোক, আমাদের কাছে যা আছে আমরা তা নিয়েই কাজ চালিয়ে যাব। এবং এখন আমাদের কাছে যা আছে তা হলো চুক্তির বিভিন্ন ধারার আলোকে কিছু পদক্ষেপ যা যুদ্ধবিরতির মেয়াদকে বাড়াতে সহায়তা করবে ও হামাসের কাছ থেকে ১০ জন করে পণবন্দিকে মুক্তির গ্যারান্টি দিবে।’
যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানোর ধারায় গতকাল রাতে হামাস ১২ পণবন্দিকে মুক্তি দিয়েছে যার মধ্যে ১০ জন ইসরায়েল ও দুজন থাইল্যান্ডের নাগরিক। মিসরের রাফা সীমান্তে বন্দিদের নিয়ে আসে মুখোশ পরিহিত হামাস ও ইসলামিক জিহাদের সদস্যরা। পরে বন্দিদের রেড ক্রসের কাছে হস্তান্তর করে তারা। বিষয়টির প্রত্যক্ষদর্শী ছিল এএফপির একজন সাংবাদিক।
এএফপি জানিয়েছে, চুক্তি অনুযায়ী, এ পর্যন্ত গাজা থেকে ৬০ ইসরায়েলি পণবন্দিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ২০ জন্য থাইল্যান্ডের নাগরিক ও একজন ফিলিপিনোকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। বিপরীতে ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি থাকা ১৮০ ফিলিস্তিনিকেও মুক্তি দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে সবাই শিশু ও নারী।
এদিকে, গাজার মানুষেরা দুর্ভিক্ষের উচ্চ ঝুঁকির সম্মুখীন বলে সতর্ক করেছে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)। গতকাল বৈশ্বিক সংস্থাটি থেকে বলা হয়, উপত্যকাটিতে খাদ্য পৌঁছে দেওয়ার সম্পূর্ণ প্রবেশাধিকার পাচ্ছে না তারা। ডব্লিউএফপির মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক পরিচালক বলেন, ‘গাজার অবস্থা বিপর্যয়কর।’ আর জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ বলছে, যুদ্ধবিরতি চুক্তির অধীনে গাজায় প্রবেশ করা সাহায্য প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট নয়।