শেষ হয়ে আসছে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ, গাজায় আরও বন্দি বিনিময়
ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তির বিনিময়ে গাজা উপত্যকায় আরও ইসরায়েলি পণবন্দিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। এদিকে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে কিভাবে তা আরও বাড়ানো যায় সে বিষয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে মধ্যস্থতাকারীরা।
আজ বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) সকালে ছয়দিনের যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে তা বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন আলোচনার জন্য ইসরায়েলে পৌঁছেছেন। তার এই সফরে আলোচনায় প্রাধান্য পাবে গাজায় আরও মানবিক সহায়তা পাঠানো এবং যুদ্ধবিরতির প্রসঙ্গ। খবর এএফপির।
তবে এক্ষেত্রে আলোচনায় মধ্যস্থতাকারীদের সামনে এসেছে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ। হামাসের একটি সূত্র জানিয়েছে যুদ্ধবিরতি বাড়াতে ইসরায়েলে যে প্রস্তাব দিয়েছে তাতে তারা সন্তুষ্ট নয়। সূত্রটি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছে, যুদ্ধবিরতি বাড়ানোর জন্য যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে তা খুব ভালো নয়। এতে মাত্র দুদিনের জন্য যুদ্ধ থামানোর কথা বলা হয়েছে।
এদিকে ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা যুদ্ধবিরতি বাড়াতে শর্তের বিষয়ে বৈঠক করেছে। আর চলতে থাকা এই আলোচনার সময় ১০ জন ইসরায়েলি পণবন্দি তাদের দেশে ফিরে গেছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে মুক্তি পাওয়া লোকজনের মধ্যে রয়েছে পাঁচজন নারী, তিনজন শিশু ও দুজন যুবক।
পণবন্দিরা ইসরায়েলে পৌঁছার পরপরই ষেখানকার কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয় ৩০ জন ফিলিস্তিনিকে। যাদের মধ্যে ছিলেন আহেদ তামিমি নামের স্বনামধন্য একজন ফিলিস্তিনি স্বাধীনতা আন্দোলনের কর্মী।
কাতার, মিশর ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় এ পর্যন্ত ছয়টি দলে পণবন্দিদের মুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া চুক্তির বাইরে গতকাল বুধবার আরও চারজন থাই নাগরিককে মুক্তি দেওয়া হয়। হামাস জানায় এদের মধ্যে রাশিয়া ও ইসরায়েলের দ্বৈত নাগরিক দুইজন নারীকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিশেষ উদ্যোগে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
গত ৭ অক্টোবর হামাসের সশস্ত্র যোদ্ধারা ইসরায়েলে প্রবেশ করে এক হাজার ২০০ লোককে হত্যা করে এবং সেখান থেকে আরও ২৪০ জনকে অপহরণ করে গাজায় নিয়ে আসে। এরপর থেকে গাজায় আকাশ ও স্থলপথে ইসরায়েলের বিরামহীন হামলায় ১৫ হাজারের কাছাকাছি ফিলিস্তিনি নিহত হয়। তাদের হামলায় গাজার উত্তরাঞ্চল ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে।
ওদিকে যুদ্ধবিরতি অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতেরেস গাজায় সত্যিকার মানবিক যুদ্ধবিরতির ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছেন। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে গুতেরেস বলেন, গাজাবাসী চরম মানবিক দুর্বিপাকের মধ্যে রয়েছে। তিনি বলেন, সাত সপ্তাহের ক্রমাগত বোমাবর্ষণে সেখানকার মানুষ এখন আশ্রয়হীন অবস্থায় খাদ্য ও পানীয়র চরম সঙ্কটের মুখোমুখি।