গাজা যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন জাতিসংঘ-দূতরা
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের রাষ্ট্রদূতরা গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে অনেকে মিসরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সেখানে সফরে গিয়ে রাষ্ট্রদূতরা তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎকরেন।
নিরাপত্তা পরিষদের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্র ভেটো দেওয়ার কয়েক দিনের মধ্যে গতকাল সোমবার (১১ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রদূতরা এই সাক্ষাতের জন্যে মিসর সফরে যান। একদিনের অনানুষ্ঠানিক এই সফরটি আয়োজন করে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মিসর। রাশিয়া ও ব্রিটেনসহ বেশ কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূতরা এই সফরে অংশ নিলেও যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্স কোনো প্রতিনিধি পাঠায়নি।
রাষ্ট্রদূতরা রাফাহ সীমান্তবর্তী এল আরিশে একটি হাসপাতাল পরিদর্শন করেন। এখানে গাজা যুদ্ধে আহত অনেককে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তারা অন্যান্য ক্ষতিগ্রস্তের মধ্যে সাক্ষাৎ করেন ওয়াফা আসাদ নামের ২৭ বছর বয়সী একজন নারীর সঙ্গে। তিনি গর্ভবতী ছিলেন। ইসরায়েলি হামলায় তার বাড়ি গুঁড়িয়ে গেছে। স্বামী নিহত ও দুই মেয়ে আহত হয়েছে। ওয়াফার একটি হাত ও পা কেটে ফেলতে হয়েছে। তবু সীমান্ত পাড়ি দেওয়ার পরপরই সে একটি সন্তানের জন্ম দেন। তার বোন আলা রাষ্ট্রদূতদের এ কথা জানান। জাতিসংঘের প্রতি আলার আহ্বান, যুদ্ধ যেন বন্ধ হয়।
এ পরিস্থিতিতে ইকুয়েডরের রাষ্ট্রদূত জোসে ডি লা গাসকা বলেছেন, হাসপাতাল পরিদর্শন করে তিনি বিধ্বস্ত হয়ে গেছেন। তিনি আরও বলেছেন, এইমাত্র আমি একজন তরুণী মাকে দেখলাম, তিনি তার শিশু বাচ্চাকে হারিয়েছেন। অপর কন্যা আহত হয়েছে।
জোসে ডি লা গাসকা বলেন, ‘আমি যা দেখেছি, তা আর দেখতে চাই না। এটি ভয়ঙ্কর।’
এদিকে, যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার বিপর্যয়কর মানবিক পরিস্থিতিতে ক্ষোভপ্রকাশ করে জাতিসংঘ প্রধান এন্তোনিও গুতেরেস গাজাকে সমাধিক্ষেত্রের সঙ্গে তুলনা করেছেন।
গাজায় অব্যাহত ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ১৮ হাজার ছাড়িয়েছে। হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।
গত ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে আকস্মিক বড়ো ধরনের হামলা চালায়। এতে এক হাজার ২০০ ইসরায়েলি প্রাণ হারায়। এ ছাড়া হামাস প্রায় দুশো ইসরায়েলিকে জিম্মি হিসেবে আটক করে। এর প পরই ইসরায়েল গাজায় নির্বিচারে বোমা বর্ষণ ও পরে সর্বাত্মক হামলা শুরু করে।