ধ্বংসপ্রাপ্ত মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করেন গাজার বাসিন্দারা
ফিলিস্তিনের গাজায় আজ বুধবার (১০ এপ্রিল) পালিত হয়েছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। তবে গত ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের নির্বিচার হামলার কারণে এ বছর ঈদের কোনো আমেজ নেই উপত্যকাটিতে। এমনকি ঈদেও সেখানে হয়েছে হামলা, ঝরেছে রক্ত। গাজা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইসরায়েলের হামলায় উপত্যকাটিতে এখন পর্যন্ত ৩৩ হাজার ৪৮২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ১২২ জন। আজ বুধবার (১০ এপ্রিল) এমন খবর প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি।
আগের বছরগুলোতে গাজায় ঈদটা এমন ছিল না। ঈদে রাস্তাগুলোতে থাকত মানুষের ভিড়। রাতভর কেনাকাটায় ব্যস্ত থাকতেন। দোকানে দোকানে বিক্রি হতো হরেক পদের মিষ্টান্ন, খেজুর ও চকলেট। দোকানে দোকানে সাজানো থাকত নতুন পোশাক। ঈদের সকালে দল বেঁধে ঈদের নামাজ পড়তে যেতেন ফিলিস্তিনিরা। সারা দিন মেতে থাকতেন আনন্দে।
গাজায় ইসরায়েলি নৃশংসতা শুধু ফিলিস্তিনিদের প্রাণই কেড়ে নেয়নি, সেখানে দেখা দিয়েছে খাবার ও পানির তীব্র সংকট। উপত্যকাটিতে প্রয়োজনীয় ত্রাণ ঢুকতে দিচ্ছে না ইসরায়েল। এতে চরম দুর্দশায় রয়েছেন সেখানকার ২৪ লাখ বাসিন্দা। তাঁদের বেশির ভাগই এখন আশ্রয় নিয়েছেন একেবারে দক্ষিণে মিসর সীমান্তের রাফাহ এলাকায়।
এত দুর্দশার মধ্যেও গাজার বাসিন্দাদের অনেকে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। রাফায় আশ্রয় নেওয়া হারুন আল-মেদাল্লাল বলছিলেন, গাজার যেসব শিশু মা-বাবা ও বাড়িঘর হারিয়েছে, তাদের মুখে একটু হাসি ফোটাতে বিস্কুট তৈরি করছেন সেখানকার নারীরা। হারুন বলেন, ‘দুঃখ-কষ্ট, ধ্বংস, বাস্তুচ্যুত হওয়া ও নির্বিচার গোলা হামলার মধ্যেও আমরা জীবনকে ভালোবাসি।’
প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস। এতে নিহত হন ১ হাজার ১৩৯ জন। এর পরপরই গাজায় হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ইসরায়েলের হামলায় নিহতদের প্রায় ৪০ শতাংশই শিশু। ইসরায়েলি নিষ্ঠুরতার সবচেয়ে বড় শিকারটা হয়েছে গাজার শিশুরা।
গাজার খান ইউনিস এলাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি এমনই এক শিশু খলিল আবু হাসনাইন। গত বছর গাজা নগরীর শেখ রেদওয়ান এলাকায় নিজ বাড়িতে ঈদ করেছিল সে। হাসনাইন জানায়, ‘আমরা কেক ও বিস্কুট বানাতাম, নতুন পোশাক কিনতাম আর ঈদের জন্য অপেক্ষা করতাম। এবার ঈদে সেসব কিছুই নেই।’