বাংলাদেশের স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে গত ভারতে পালিয়ে যান ৫ আগস্ট। এরপর থেকে সেখানেই আছেন তিনি। পরে বাংলাদেশিদের জন্য ট্যুরিস্ট ভিসা দেয়নি ভারত। যদিও তার আগে অনেকেই পেয়েছেন ভিসা। তা ছাড়া অনেকেরই আছে চিকিৎসা ভিসাও। এ ছাড়া পাচ্ছেন ব্যবসায়িক ভিসা। তবুও দেশটিতে কমেছে বাংলাদেশি পর্যটকের সংখ্যা। এর ফলে ব্যপক প্রভাব পড়েছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও হোটেল-রেস্তোরাঁয়।

ভারতের পর্যটন মন্ত্রণালয়ের বরাতে তথ্য তুলে ধরেছে দেশটির গণমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস। তারা বলছে, মন্ত্রনালয়ের তথ্যানুযায়ী, ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশি পর্যটকদের সংখ্যা ১.২৯ মিলিয়নে নেমে এসেছে (অস্থায়ী তথ্য), যা ২০২৩ সালে ২.১২ মিলিয়ন ছিল। বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং ভিসা সংক্রান্ত বিধিনিষেধের কারণে এই সংকট তৈরি হয়েছে।

বাংলাদেশি পর্যটকদের প্রবাহের পরিবর্তন

ব্যবসাবাণিজ্য, চিকিৎসা ও অবসর পর্যটনে বাংলাদেশের ওপর ভারতের নির্ভরতা দীর্ঘদিনের। ২০১৯ সালে বাংলাদেশ থেকে ভারতে আসা পর্যটকের সংখ্যা ছিল ২.৫৮ মিলিয়ন। তবে, কোভিড-১৯ মহামারির কারণে ২০২০ সালে এই সংখ্যা  সাড়ে পাঁচ লাখে নেমে আসে। ধীরে ধীরে পুনরুদ্ধার হলেও ২০২৪ সালে তা আবারও হ্রাস পেয়েছে।

২০২৩ সালে বাংলাদেশি পর্যটকদের সংখ্যা ছিল দুই দশমিক ১২ মিলিয়ন, কিন্তু ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত তা এক দশমিক ২৯ মিলিয়নে নেমে এসেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৯ দশমিক ১৪ শতাংশ কম।

জুলাই ও আগস্ট মাসের উল্লেখযোগ্য পতন

২০২৪ সালের জুলাই ও আগস্ট মাসে পর্যটক সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। ২০২৩ সালের জুলাই মাসে এক লাখ ৯৬ হাজার ৯৯১ পর্যটকের তুলনায় ২০২৪ সালে এই সংখ্যা কমেছে। এ মাসে এক লাখ ৫৭ হাজার ৮৬ জন, যা ২০ দশমিক ২৬ শতাংশ কম।

২০২৩ সালের আগস্টে এক লাখ ৬০ হাজার ১৬৪ পর্যটকের তুলনায় ২০২৪ সালে এসেছে মাত্র ৯৯ হাজার ১৭৩ জন, যা ৩৮ দশমিক আট শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের বিশ্লেষণ

ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অব ট্যুর অপারেটরসের (আইওটিএ) পশ্চিমবঙ্গ চেয়ারম্যান এবং ইমপ্রেশন ট্যুরিজম সার্ভিসেসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দেবজিত দত্ত বলেন, বাংলাদেশ ভারতের পর্যটন খাতে সবচেয়ে বড় উৎস দেশ। প্রতি বছর প্রায় ২৩ মিলিয়ন পর্যটক আসে। তিনি আরও বলেন, বর্তমান সংকটের জন্য ভিসা সীমাবদ্ধতা দায়ী। বর্তমানে শুধুমাত্র ব্যবসায়িক এবং চিকিৎসা ভিসা দেওয়া হচ্ছে, তাও খুব সীমিত পরিসরে।

বাংলাদেশি পর্যটকের ওপর নির্ভরশীল ব্যবসার ক্ষতি

পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতীয় বিভিন্ন অঞ্চলের হোটেল, রেস্তোরাঁ ও পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলো এই সংকটের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কলকাতার কেন্দ্রস্থলের মতো মধ্যম ও বাজেট পর্যায়ের ব্যবসাগুলোও বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছে।