আবারও কানাডাকে অঙ্গরাজ্য করার প্রস্তাব ট্রাম্পের
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর পদত্যাগকে কেন্দ্র করে আবারও বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, কানাডা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একীভূত হয়ে দেশটির ৫১তম অঙ্গরাজ্যে পরিণত হওয়া উচিত। এতে নিজেকে টিকিয়ে রাখতে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতার দরকার পড়বে না কানাডার।
সোমবার (৬ জানুয়ারি) সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশালে পোস্ট করা একটি বার্তায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
৯ বছর ক্ষমতায় থাকার পর সোমবার লিবারেল পার্টির প্রধানের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। এর কয়েক ঘণ্টা পরেই তাকে খোঁচা দিয়ে এমন মন্তব্য করেন ট্রাম্প।
ট্রাম্প তাচ্ছিল্য করে বলেন, ‘কানাডা হবে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য। আর প্রধানমন্ত্রী হবেন ‘গভর্নর জাস্টিন ট্রুডো।’
মার্কিন নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, ‘ট্রুডো পদত্যাগ করেছেন, কারণ তিনি জানতেন যে কানাডাকে টিকিয়ে রাখতে যুক্তরাষ্ট্র যে ভর্তুকি দিত, সেটা বাতিল করা হবে। কানাডা সেটা আর পাবে না। দেশটির সঙ্গে কোনো বাণিজ্যি ঘাটতিও মেনে নেবে না যুক্তরাষ্ট্র।’
আগে থেকেই সীমান্তবর্তী দেশ কানাডা ও মেক্সিকোর সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতির বিরুদ্ধে সরব ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম এই প্রেসিডেন্ট। নিজের দ্বিতীয় মেয়াদের নির্বাচনী প্রচারে প্রতিযোগী দেশগুলোর পণ্যে রাজস্ব বাড়ানোর ওপরও জোর দেন। প্রচারের মূল কেন্দ্রবিন্দুতে রাখেন বিদেশি রাষ্ট্রগুলোর পণ্যে রাজস্ব বৃদ্ধি।
এর আগে গত নভেম্বরের শেষ দিকে যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, কানাডা চাইলে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১ তম অঙ্গরাজ্যে পরিণত হতে পারে। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ফ্লোরিডায় ট্রাম্পের বাসভবন মার-এ-লাগোতে সাক্ষাৎ করতে এলে এ কথা বলেন তিনি।
ডোনাল্ড ট্রাম্প জাস্টিন ট্রুডোকে বলেন, যদি যুক্তরাষ্ট্র আরোপিত শুল্কও দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও অভিবাসন সমস্যা সমাধান না করে কানাডার অর্থনীতিকে ধ্বংস করে ফেলে, তাহলে কানাডার উচিত হবে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১ তম অঙ্গরাজ্য হয়ে যাওয়া।
গেল ১৮ ডিসেম্বর ট্রাম্প বলেন, ‘কানাডাকে ১০০ মিলিয়ন ডলার ভর্তুকি দেয় যুক্তরাষ্ট্র।’ কিন্তু ফ্যাক্টচেকাররা দাবি করেন, তার দেওয়া এই তথ্য ভুল। কারণ মার্কিন সরকারের পররাষ্ট্র সহায়তা ওয়েবসাইট থেকে জানা গেছে, অন্তত ২০০১ সাল থেকে অর্থনৈতিক সহায়তা হিসেবে কোনো একক দেশ হিসেবে কানাডাকে ৩৫ দশমিক এক মিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থ দেয়নি যুক্তরাষ্ট্র।
ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ানোর পর ট্রুডো বলেন, ‘দলীয় আন্তকোন্দলের বিষয়টি আমার কাছে এতোই পরিষ্কার যে, আগামী নির্বাচনে লিবারেল মানদণ্ড আমি আর বহন করতে পারবো না।’
ট্রুডোকে খোঁচা দিয়ে সামাজিক মাধ্যম ট্রুথস্যোশালে ট্রাম্প আরও বলেন, ‘যদি কানাডা-যুক্তরাষ্ট্র একীভূত হয়ে যায়, তাহলে রাশিয়া ও চীনা জাহাজের হুমকি থেকে দুই দেশ অনেক নিরাপদ থাকতে পারবে।’