মানসিক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে লস অ্যাঞ্জেলেসের বাসিন্দারা
ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড প্রত্যক্ষ করছে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের লস অ্যাঞ্জেলেসের বাসিন্দারা। মুহূর্তেই প্রচণ্ড বেগে দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে শহরের পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চলের এলাকাগুলোতে। চারদিনে পুড়ে ছাই হয়েছে ৩৪ হাজার একর জায়গার গাছপালা, ১০ হাজার স্থাপনাসহ সবকিছু। প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার মানুষকে ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে হয়েছে।
এমতাবস্থায় দাবানল থেকে বেঁচে ফেরা বাসিন্দাদের মানসিক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল সিএনএনের এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অগ্নিকাণ্ডের কবরে পড়া এসব মানুষ ছোট থেকে বড় ধরনের মানসিক চাপ অনুভব করতে পারেন।
আবহাওয়া পরিবর্তন ও মানসিক স্বাস্থ্য কাউন্সিলের সহকারী পরিচালক এবং ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মিশ্রা ড. জ্যোতি মিশ্রা বলেন, আমার শহর সান ডিয়াগো দাবানলে আক্রান্ত হয়নি। তবে লস অ্যাঞ্জেলেসে থাকা আত্মীয়রা আমাদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। আমরা খুশি যে তারা নিরাপদে পৌঁছাতে পেরেছেন।
মিশ্রা বলেন, আমরা জানি না তাদের (আত্মীয়) বাড়ি সেখানে কেমন আছে। নিজের শহর, বাড়ি হারানো ভুক্তভোগীদের মনে এক ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি করে। যার কারণে অগ্নিকাণ্ডের শিকার মানুষের মধ্যে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা বাড়তে পারে।
২০১৮ সালে করা মিশ্রার করা এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা জীবনে একবার হলেও ব্যক্তিগতভাবে অগ্নিকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন, তারা উদ্বেগ, বিষণ্নতা ও পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেসের মতো সমস্যায় বেশি ভোগেন। যারা কখনো অগ্নিকাণ্ডের শিকার হননি তাদের মধ্যে এ ধরনের প্রবণতা কম দেখা দেছে।
মিশ্রা বলেন, ‘লস অ্যাঞ্জেলেস অঞ্চলের লাখ লাখ বাসিন্দা শুধু শারীরিক নিরাপত্তার হুমকির মুখে নয়, তাদের মানসিক স্বাস্থ্যও হুমকির সম্মুখীন। এটি তাদের মানসিক অবস্থাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে চারপাশের সবকিছুকে হুমকি মনে হয়, তখন নির্দিষ্ট কাজে মনোযোগ দেওয়া খুব কঠিন হয়ে পড়ে’
এঘটনায় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে দশজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। দাবানলে ইতোমধ্যে সেখানকার প্রায় ৩১ হাজার একর এলাকা পুড়ে ছাই হয়েছে। প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার মানুষকে ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে বলা হয়েছে। কর্মকর্তারা বলেছেন, আরও ২ লাখ মানুষকে সতর্কতার আওতায় রাখা হয়েছে। গত মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) রাতে ইটন এলাকা থেকে এই আগুনের সূত্রপাত ঘটে।