নারীদের ‘মানুষ’ মনে করে না তালেবান : মালালা
শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী মালালা ইউসুফজাই বলেছেন, তালেবানরা নারীদের মানুষ হিসেবে গণ্য করে না। তাদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করে। আবার নিজেদের অপরাধগুলোকে সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় যুক্তিতে আড়াল করার চেষ্টা করে। এভাবে তালেবানরা নারীদের শিক্ষা, কর্মসংস্থান এবং সমাজে অবাধ অংশগ্রহণ থেকে বঞ্চিত করছে।
তালেবানের এই ধরনের আচরণকে জাতিসংঘ জেন্ডার এপার্টহাইড (লিঙ্গ ও জাতিবিদ্বেষ) হিসেবে অভিহিত করেছে, যা নারীদের প্রতি নিষ্ঠুরতা ও তাদের অধিকার হরণের অন্যতম পন্থা।
রোববার (১২ জানুয়ারি) পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে মুসলিম দেশগুলোর অংশগ্রহণে মেয়েদের শিক্ষাবিষয়ক এক সম্মেলনে মালালা ইউসুফজাই এসব কথা বলেন। এসময় তিনি আফগানিস্তানে তালেবান সরকারের শাসনকে বৈধতা না দিতে মুসলিম নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান।
দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে ডজনখানেক মুসলিমপ্রধান দেশের মন্ত্রী ও শিক্ষা বিষয়ক কর্মকর্তারা অংশ নিয়েছেন। শনিবার পাকিস্তানের শিক্ষামন্ত্রী খালিদ মকবুল সিদ্দিকী এএফপিকে জানিয়েছেন, আমন্ত্রণ জানানো সত্ত্বেও আফগানিস্তানের তালেবান সরকারের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিনিধি সম্মেলনে উপস্থিত হননি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২১ সালে আফগানিস্তানে ক্ষমতায় ফিরে আসার পর তালেবান সরকার কঠোর শরিয়া আইন প্রয়োগ করেছে। তাদের এই বিধিনিষেধের ফলে নারীদের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষায় অংশগ্রহণ বন্ধ হয়েছে, অনেক সরকারি চাকরি থেকেও তারা বঞ্চিত হয়েছেন।
মালালা বলেন, আফগান সরকারের নীতিগুলোর মধ্যে কিছুই ইসলামিক নয়। বরং সেগুলো আমাদের ধর্মের (ইসলাম) মূলনীতির বিপরীতে।
২৭ বছর বয়সী এই নোবেল বিজয়ী বলেন, তালেবান তাদের এসব ভ্রান্ত আইন অমান্য করার জন্য নারীদের শাস্তি দেয়, প্রহার করে। সহজভাবে বললে, তারা নারীদের মানুষ হিসেবে গণ্য করে না।
পাকিস্তানি মেয়েদের শিক্ষার পক্ষে প্রচার চালানোর সময় ২০১২ সালে মাত্র ১৫ বছর বয়সে তালেবানের হাতে গুলিবিদ্ধ হন মালালা। পরবর্তীতে ২০১৪ সালে তিনি নারীদের শিক্ষার অধিকারের জন্য নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হন।