অবশেষে শূন্যরেখায় সেই মানসিক প্রতিবন্ধী নারীকে উদ্ধার
খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলা সীমান্তের ফেনী নদীর (শূন্যরেখায়) চরে আটকেপড়া মানসিক ভারসাম্যহীন এক নারীকে এক মাস দুদিন পর উদ্ধার করেছে সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। পরে তাঁকে রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির কাছে হস্তান্তর করা হয়। স্বেচ্ছাসেবী এই সংগঠনটি এখন ওই নারীকে তাঁর নিজের বাড়িতে পৌঁছে দেবে।
ওই নারীর নাম শাহানাজ পারভীন (৩৫)। তিনি কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলার দইখাওয়ারচর গ্রামের হাতেম আলী শেখ ও ওমেলা খাতুনের মেয়ে। ভারসাম্যহীন অবস্থায় প্রায় দুই বছর আগে তিনি বাড়ি থেকে নিরুদ্দেশ হন।
পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পরই বিজিবি শাহানাজকে নোম্যানস-ল্যান্ড এলাকা থেকে সরিয়ে নদীরপাড়ে নিয়ে আসে। চলমান করোনা পরিস্থিতির কারণে থমকে যায় তাঁর গ্রামে পাঠানোর কার্যক্রম। সর্বশেষ তাঁর করোনার পরীক্ষায় রিপোর্ট নেগেটিভ আসায় আজ তাঁকে নিজ বাড়িতে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হলো।
বিকেল সাড়ে ৪টায় আনুষ্ঠানিকভাবে শাহানাজকে রেডক্রিসেন্টের কাছে হস্তান্তর করা হয়। একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে তাঁকে কুড়িগ্রামের গ্রামের বাড়িতে পাঠানো হয়। এ সময় রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও খাগড়াছড়ি রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী, বিজিবির গুইমারা সেক্টর কমান্ডার কর্নেল জি এইচ এম সেলিম হাসান, রামগড় ৪৩ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারিকুল হাকিম, রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন মজুমদার, আইসিআরসির প্রতিনিধি মাহবুবুল হক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বিজিবি জানায়, গত ২ এপ্রিল সকালে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফ মানসিক ভারসাম্যহীন ওই নারীকে বেদমভাবে মারধর করে বাংলাদেশে পুশইনের চেষ্টা করে। তখন বিজিবির বাঁধার মুখে সীমান্তের শুন্যরেখার বালুর চরে আটকা পড়েন ওই নারী। এ নিয়ে বিজিবি-বিএসএফের মধ্যে দুই দফায় প্ল্যাগ মিটিং হলেও বিষয়টির কোনো সুরাহা হয়নি।
পরে ওই নারীর দেওয়া তথ্যসূত্র ধরে বাংলাদেশ ও ভারতে অনুসন্ধান শুরু করে আইসিআরসি ও বিডিআরসি। অনুসন্ধান শেষে বিজিবি, আইসিআরসি ও বিডিআরসি ওই নারী স্বজনদের সঙ্গে কথা বলতে সক্ষম হয়।
রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির খাগড়াছড়ির চেয়ারম্যান কংজুরী চৌধুরী ও ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন মজুমদার জানান, বিজিবির আন্তরিকতায় গত দুই বছর ধরে নিখোঁজ থাকা একজন নারীকে আইসিআরসির রেস্টোরিং ফ্যামিলি লিংকস (আরএফএল) এর মাধ্যমে তাঁর পরিবারের কাছে পৌঁছে দেওয়া গেল। এজন্য তাঁরা গণমাধ্যমকে ধন্যবাদ জানান।