ইউপিডিএফ সভাপতিসহ ২৭ নেতাকর্মীকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ
ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) কেন্দ্রীয় সভাপতি প্রসীত বিকাশ খীসাসহ তাঁর দলের ২৭ নেতাকর্মীকে ১৫ দিনের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
রাঙামাটি চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ ফারুক পত্রিকায় এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তাদের আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন। অন্যথায় তাদের অনুপস্থিতিতে মামলার কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয় বিজ্ঞপ্তিতে।
২০১৮ সালে ২৬ এপ্রিল নানিয়ারচর থানায় কালুময় চাকমা হত্যার অভিযোগে ২৭ জনের বিরুদ্ধে এই মামলা করা হয়।
নানিয়ারচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুজন হালদার বলেন, ‘২০১৮ সালের ১১ এপ্রিল কালুময় চাকমাকে তার নানিয়ারচরের বাসা থেকে তুলে নেয় সন্ত্রাসীরা। পরে বাথছড়ি শ্মশান থেকে কালুময় চাকমার দাহ করা লাশ উদ্ধার করা হয়। কালুময় চাকমার হত্যার ঘটনায় সম্পৃক্ততার দায়ে এডমিশন চাকমা বাদী হয়ে ২৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলার পর তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান পরিচালনা করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। কিন্তু তাদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি তারা। তারা আত্মসমর্পণ না করায় পরবর্তী সময়ে আদালত নিয়ম অনুযায়ী কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।
আদালতের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘তফসিলভুক্ত আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হইয়াছে এবং ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮-এর ৮৭ ও ৮৮ ধারার বিধানমতে আসামিদের বিরুদ্ধে কার্যক্রম গ্রহণ করা হইয়াছে সেহেতু এ আদালতে এরূপ বিশ্বাস করার যুক্তিসঙ্গত কারণ রহিয়াছে যে, এ আসামিগণ গ্রেপ্তার এবং বিচার এড়ানোর জন্য পলাতক রহিয়াছেন বা আত্মগোপন করিয়াছেন এবং তাহাদের আশু গ্রেপ্তার হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নাই সেহেতু ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮-এর ৩৩৯বি(১) ধারামতে নিম্ন তফসিলভুক্ত আসামিগণকে এ আদেশ পত্রিকায় প্রকাশের ১৫দিনের মধ্যে আদালতে হাজির হইবার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হইল। ব্যর্থতায় আসামিদের অনুপস্থিতিতে বিচার অনুষ্ঠিত হইবে।’
আসামিরা হলেন ইউপিডিএফের কেন্দ্রীয় সভাপতি প্রসীত বিকাশ খীসা (৫৪), রঞ্জন মনি চাকমা জেনিট (৫২), সবিচ চাকমা সজল সুকর্ণ (৫৭), শান্তিদেব চাকমা সানি (৫০), সুমেট চাকমা (৪৫), উদয় শংকর চাকমা (৫২), প্রমোদ বিকাশ খীসা (৫৩), অমর জীবন চাকমা (৫৫), সর্বানন্দ চাকমা মকানন্দ (৪১), কানন কুসুম চাকমা (৪৭), রবিচন্দ্র চাকমা (৪৮), বিমল চাকমা উদয় (৫০), সুবিকাশ চাকমা (৩৭), সুজন মনি চাকমা (৩২), মধুরঞ্জন চাকমা (৪৮), অনিল চাকমা (৩০), সুপন চাকমা সুশীল জীবন (৫২), জ্যোতিলাল চাকমা (৫২), বিদ্যাময়ী ডিএম (৪০), অমর কান্তি চাকমা (৫০), কালামনি চাকমা (৩০), বৌধিসত্য চাকমা রিচার্জ (৪৪), বাবুল চাকমা (৩৫), তুষাণ চাকমা (৩০), সুশীল চাকমা (৩০), রহিম চাকমা (২৫) ও বিবিদ রতন চাকমা (২২)।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৭ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির বিরোধিতা করে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাবেক সভাপতি প্রসীত বিকাশ খীসার নেতৃত্বে আত্মপ্রকাশ করে পাহাড়ের দ্বিতীয় আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল ইউপিডিএফ। প্রতিষ্ঠার পর সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সঙ্গে সশস্ত্র সংঘাতে কয়েকশ নেতাকর্মীর প্রাণহানি হয়েছে।