উদ্বোধনের আগেই নদীতে বিলীন সাইক্লোন সেন্টার
চাঁদপুর সদর উপজেলার রাজরাজেশ্বরের ইউনিয়নে নবনির্মিত তিনতলা বিশিষ্ট সাইক্লোন সেন্টারটি গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে পদ্মা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
প্রতি বছর প্রমত্তা পদ্মার অব্যাহত ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েন এই ইউনিয়নের বাসিন্দারা। এরই মধ্যে এক সপ্তাহের ব্যবধানে পাঁচ শতাধিক বসত ঘরবাড়ি, ফসলি জমি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বাজারসহ বিভিন্ন স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বাদ যায়নি নবনির্মিত তিনতলা বিশিষ্ট স্কুল কাম সাইক্লোন সেন্টারটিও। সেটিও বৃহস্পতিবার বিকেলে পদ্মা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
রাজরাজেশ্বরের ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আলহাজ হযরত আলী জানান, গত ১৭ জুলাই নদী ভাঙনের মুখে পড়ে সাইক্লোন সেন্টারটি। স্থানীয় শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া এবং ইউনিয়নবাসীর কথা চিন্তা করে স্থানীয় এমপি ও বর্তমান সরকারের শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির প্রচেষ্টায় এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে ২ কোটি ২৯ লাখ টাকা ব্যয়ে এখানকার বাসিন্দাদের জন্য নির্মিত হয় তিনতলা বিশিষ্ট রাজরাজেশ্বর ওমর আলী হাই স্কুল কাম সাইক্লোন সেন্টারটি। গত বছরের জানুয়ারি মাসে এর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। দুই মাস আগে কাজ শেষে হস্তান্তর করা হয়েছিল কর্তৃপক্ষের কাছে। তবে এখনো উদ্বোধন করা হয়নি। উদ্বোধনের আগেই পদ্মা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায় সাইক্লোন সেন্টারটি।
ইউপি চেয়ারম্যান আরো জানান, যখন ভবনটির স্থান নির্বাচন করা হয় তখন নদী বর্তমান স্থান থেকে প্রায় চার-পাঁচ কিলোমিটার দূরে ছিল। উজান থেকে নেমে আসা পানির প্রবল স্রোতে মেঘনা ও পদ্মা নদীর মিলনস্থল এবং রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের চর এলাকায় প্রচণ্ড ঢেউ ও ঘূর্ণি স্রোতের সৃষ্টি হয়। যার কারণে এক সপ্তাহের ব্যবধানে পাঁচ শতাধিক বসত ঘরবাড়ি, ফসলি জমি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ ছোট-বড় বাজার নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ওমর আলী হাই স্কুল ভবনটি গত এক সপ্তাহ ধরে পদ্মার প্রচণ্ড ঢেউ এবং ঘূর্ণি স্রোতের সঙ্গে যুদ্ধ করে। অবশেষে সেটিও বৃহস্পতিবার বিকেলে পদ্মা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। রাজরাজেশ্বর ওমর আলী হাই স্কুলটি এর আগে আরো ১১ বার নদী ভাঙনের শিকার হয়।
রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের লক্ষ্মীরচর বাজারের ব্যবসায়ী আলাউদ্দিন বলেন, ‘আমরা রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নবাসী প্রতি বছর নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হই। বসত ঘরবাড়ি, ফসলি জমি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ধর্মীয়প্রতিষ্ঠান, ছোট-বড় বাজারসহ আমাদের সব কিছু এই পদ্মায় এক এক করে বিলীন হয়ে গেছে। আমাদের সন্তানদের লেখাপড়া হুমকির মধ্যে পড়েছে। কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ভবনও রক্ষা পায় না পদ্মার ভাঙন থেকে। তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর কাছে আমাদের আকুল আবেদন আমাদের সন্তাদের শিক্ষা বিস্তারে যেন এই চরাঞ্চলে একটি ভাসমান বিদ্যালয় স্থাপন করা হোক।