করোনা মহামারিকালে ২১ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ প্রস্তাব পেয়েছে বাংলাদেশ
বাংলাদেশের বিভিন্ন বিনিয়োগ উন্নয়ন সংস্থার প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২০ সালের জানুয়ারিতে কোভিড-১৯ মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে গত দুই বছরে বাংলাদেশ ২১ দশমিক ১৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি বিনিয়োগ প্রস্তাব পেয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, বাংলাদেশ ২০২০-২০২১ অর্থবছরে ২ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার এবং ২০১৯-২০২০ সালে ২ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন ডলার প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) পেয়েছে ।
এ বিনিয়োগ প্রস্তাবগুলো সরকার পরিচালিত চারটি বিনিয়োগ উন্নয়ন সংস্থার (আইপিএ) মাধ্যমে এসেছে, যা একাধিক লকডাউন এবং বারবার কোভিড-১৯ ঢেউ সত্ত্বেও বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিনিয়োগের জন্য ক্রমবর্ধমান বিনিয়োগকারীদের ইচ্ছার প্রতিফলন।
এর মধ্যে বাংলাদেশের শীর্ষ বিনিয়োগ উন্নয়ন সংস্থা বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (বিআইডিএ) মহামারির শুরু থেকে ১৪ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ প্রস্তাব পেয়েছে।
বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) পাঁচ বিলিয়ন ডলার আকর্ষণ করেছে এবং বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বিইপিজেডএ) এক দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলার মূল্যের বিনিয়োগ প্রস্তাব আকর্ষণ করেছে।
বিআইডিএ ২০২০ সালে সাত দশমিক ১২ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ পায়, যার মধ্যে চার দশমিক ৮৫ বিলিয়ন ডলারমূল্যের প্রস্তাব স্থানীয় বাংলাদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে আসে এবং বিদেশি বিনিয়োগকারী এবং যৌথ উদ্যোগের বিনিয়োগ প্রস্তাব পায় দুই দশমিক ২৬ বিলিয়ন ডলার।
বিআইডিএ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২১ সালের (২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত) মোট বিনিয়োগ প্রস্তাব সাত দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছে, যার মধ্যে স্থানীয় বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ছয় দশমিক ৮৫ বিলিয়ন ডলার এবং একই সময়ে বিদেশি/যৌথ উদ্যোগের প্রস্তাব ছিল ৮০৬ দশমিক ২৭ মিলিয়ন ডলার।
বিআইডিএ’র নির্বাহী চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমরা এক অভূতপূর্ব ও চ্যালেঞ্জিং সময়ে এটি অর্জন করেছি, যখন কোভিড-১৯ মহামারি বিশ্বের বেশির ভাগ স্থানে অর্থনৈতিক অর্জন বিপরীতমুখী।
বিআইডিএ’র নির্বাহী চেয়ারম্যান উল্লেখ করেন, এটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বের ফল, যাঁর সরকার বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য পূর্বশত—রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতা প্রদান করেছে। তিনি আরও বলেন, এর ফলে বাংলাদেশে বিনিয়োগে বিদেশি ও স্থানীয় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান আগ্রহও প্রতিফলিত হয়।
দুবাই এক্সপো ২০২০-তে বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের একটি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিআইডিএ’র নির্বাহী চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, এমনকি এ চ্যালেঞ্জিং সময়েও বাংলাদেশ বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে বিনিয়োগের জন্য একটি আকর্ষণীয় গন্তব্য হয়ে রয়েছে।
বিআইডিএ’র নির্বাহী চেয়ারম্যান উল্লেখ করেন, বাংলাদেশে মধ্যবিত্ত শ্রেণির ক্রমবর্ধমান ক্রয় ক্ষমতার সঙ্গে, বিনিয়োগকারীরা ১৬৬ মিলিয়ন সম্ভাব্য গ্রাহকের ওপর নির্ভর করতে পারে, যা বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সর্বাধিক সুযোগ এবং উচ্চতর সুফল প্রদান করে। তিনি আরও বলেন, ২০২৫ সালের মধ্যে মোট জনসংখ্যার মধ্যবিত্ত শ্রেণির অংশ ২৫ শতাংশে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে ৩৩ শতাংশে পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে, যা দেশে ৬২ মিলিয়নেরও বেশি ধনী গ্রাহক তৈরি করবে।