কলেজছাত্রীদের উত্ত্যক্ত : ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলা, আটক ১
শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার সরকারি সামসুর রহমান কলেজের ছয় ছাত্রীকে উত্ত্যক্তের অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। এ ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে আসামি আরিফুল ইসলামকে (২১) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি ওই কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান (সম্মান) চতুর্থ বর্ষের ছাত্র।
ওই কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইয়ামিন শিকদার ও ছাত্রলীগ নেতা মারুফ শাহরিয়ারসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে এ মামলা করা হয়েছে।
গতকাল বুধবার রাতে ভুক্তভোগী এক কলেজছাত্রী বাদী হয়ে গোসাইরহাট থানায় মামলাটি করেছেন।
অভিযুক্ত ইয়ামিন শিকদার গোসাইরহাট সরকারি সামসুর রহমান কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং ওই কলেজের অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। মারুফ কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সদস্য। তিনি ওই কলেজে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র।
এ বিষয়ে গোসাইরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোল্লা সোহেব আলী বলেন, ‘গত সোমবার আসামিরা সরকারি সামসুর রহমান কলেজের কয়েকজন ছাত্রীকে চারদিক ঘিরে ধরে বিভিন্ন ধরনের অঙ্গভঙ্গি করে কুপ্রস্তাব দেন। এক ছাত্রীর ওড়না ধরেও টান দেন বখাটেরা। ছাত্রীরা প্রতিবাদ করলে তাদের বোমা মারার হুমকিও দেন তারা। একজনকে আটক করা হয়েছে। অন্য আসামিদের আটকের জোর প্রচেষ্টা চলছে।’
কলেজের অধ্যক্ষ মো. ফজলুল হক মোল্লা বলেন, ‘ছয় ছাত্রীকে ইভ টিজিংয়ের ঘটনায় গতকাল পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। তাদের দুই কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমার দেওয়ার জন্য বলা হয়েছিল। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে আমার কাছে তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। তদন্তে ছাত্রীদের ইভ টিজিংয়ের ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। আমরা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি। তাদের নির্দেশে আমরা পরবর্তী ব্যবস্থা নেব।’
গোসাইরহাট উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান আজমল হোসেন নয়ন বলেন, ‘ইভ টিজিংয়ের বিষয়ে আমরা তদন্ত করব। যদি ইয়ামিন সিকদার এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকেন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
পুলিশ, কলেজ কর্তৃপক্ষ ও ভুক্তভোগী ছাত্রীদের সূত্র জানায়, গত সোমবার সরকারি সামসুর রহমান কলেজে সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া অনুষ্ঠান চলছিল। দুপুরে ক্যান্টিনের সামনে আম গাছের নিচে বখাটে ছেলেরা আড্ডা দিচ্ছিল। তখন ক্যান্টিনে নাস্তা খেতে যাওয়ার সময় ছাত্রীদের পথরোধ করেন ছাত্রলীগ নেতা ইয়ামিন শিকদার ও মারুফ শাহরিয়ার নেতৃত্বে কয়েকজন বখাটে ছাত্র। এ সময় তারা ছাত্রীদের বাজে প্রস্তাসহ একজনকে প্রেমের প্রস্তাব দেন। শুধু তাই নয়, এক ছাত্রীর ওড়না ধরে টান দেন বখাটেরা। আবার সেগুলো মোবাইল ফোনে ভিডিও চিত্র ধারণ করেন। ছাত্রীরা প্রতিবাদ করলে তাদের বোমা মারার হুমকিও দেন তারা।