কাশীধামের আদলে সীতাকুণ্ডে উদ্বোধন হলো বিশ্বনাথ মন্দির
ভারতের কাশীধামের আদলে বাংলাদেশে এই প্রথম চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার শঙ্করমঠে প্রতিষ্ঠিত শ্রীশ্রী বিশ্বনাথ মন্দিরের উদ্বোধন করা হয়েছে। মঠের শতবর্ষ পূর্তি উপলক্ষে আট দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য কর্মসূচির দ্বিতীয় দিন আজ বুধবার সকাল সাড়ে ৮টায় মন্দিরের উদ্বোধন করা হয়।
দেশ-বিদেশ থেকে আসা সাধু-সন্তদের নিয়ে ফিতা কেটে উদ্বোধন করেন শঙ্করমঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ স্বামী তপনানন্দ গিরি মহারাজ। এ সময় মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্বলন, মন্ত্র উচ্চারণ করা হয়। মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্বলন করেন যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো নিবাসী ঋষিশ্রেষ্ঠ শ্রীমৎ স্বামী পরমানন্দ সরস্বতী। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ স্বামী পূর্ণাত্মানন্দজী মহারাজ। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম রামকৃষ্ণ মিশনের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ স্বামী শক্তিনাথানন্দজী মহারাজ ও বিশিষ্ট দানবীর লায়ন অদুল চৌধুরী।
সকাল ৯টায় শ্রীশ্রী বিশ্বনাথ শিব প্রতিষ্ঠা ও রুদ্রাভিষেক অনুষ্ঠিত হয়। পরে আচার্যপাদ পরমহংস শ্রীশ্রীমৎ স্বামী স্বরূপানন্দ গিরি মহারাজের ১৫০তম আবির্ভাব দিবস উপলক্ষে সনাতন ধর্ম মহাসম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। মঠের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ স্বামী তপনানন্দ গিরি মহারাজের সভাপতিত্বে ও মঠের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক কেশব কুমার চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত হয় এই মহাসম্মেলন।
মহাসম্মেলনে অন্যদের মধ্যে অংশ নেন শতবর্ষ উৎসব উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক শ্রীমৎ জগদীশ্বরানন্দ ব্রহ্মচারী, অতিরিক্ত সম্পাদক শ্রীমৎ রূপকানন্দ ব্রহ্মচারী, যুগ্ম সম্পাদক শ্রীমৎ পুলকানন্দ ব্রহ্মচারী, মঠের সহসভাপতি অধ্যাপক তড়িৎ কুমার ভট্টাচার্য, যুগ্ম সম্পাদক বাসুদেব দাশ, প্রকৌশলী সুবল চন্দ্র শীল প্রমুখ। অনুষ্ঠান উপলক্ষে সকাল থেকে গুরু পূজা, অখণ্ড গীতাপাঠের ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ মনোহারিত্ব অনুষ্ঠান, শ্রীশ্রী বিশ্বশান্তি গীতাযজ্ঞ, মঙ্গলারতি, গুরু বন্দনা, হরি ওঁ কীর্তন, শ্রীশ্রী চণ্ডী ও বেদপাঠ করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকা রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ স্বামী পূর্ণাত্মানন্দজী মহারাজ বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে পালিত হচ্ছে শঙ্করমঠের শতবর্ষপূর্তি উৎসব। একইসঙ্গে শুভ উদ্বোধন হয়েছে শ্রীশ্রী বিশ্বনাথ মন্দির। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময় থেকে অনেক চড়াই-উৎরাইয়ের মধ্যে দিয়ে শ্রীমদ্ভগবদ্গীতার আদর্শ ও দর্শনে এবং অবকাঠামোগতভাবে শঙ্করমঠ আজ শতবর্ষ অতিক্রম করছে।
শতবর্ষের শ্রেষ্ঠ আধ্যাত্ম চেতনা সমৃদ্ধ উপহার হিসেবে শঙ্করমঠ ও মিশনের সঙ্গে শ্রীশ্রী বিশ্বনাথ মন্দিরকে সংযোজন করেছেন মঠের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ স্বামী তপনানন্দ গিরি মহারাজ।
যারা বিভিন্ন কারণে ভারতের বেনারসের কাশীধামে গিয়ে শ্রীশ্রী বিশ্বনাথ মন্দির দর্শনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে তারাই সীতাকুণ্ড শঙ্করমঠে প্রতিষ্ঠিত শ্রীশ্রী বিশ্বনাথ মন্দির দর্শনে জীবনকে ধন্য করতে পারবে।