কুমিল্লায় ব্যবসায়ী হত্যা : মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিনজনের মধ্যে দুজনের ফাঁসি
দশ বছর আগে কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলায় মো. সুজন নামের এক তরুণ ব্যবসায়ীকে হত্যার ঘটনায় বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিনজনের মধ্যে দুজনের ফাঁসি বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। বাকি একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ রায় দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী হেলাল উদ্দিন মোল্লা, আহসান উল্লাহ ও পংকজ কুমার কুণ্ডু।
আসামিরা হলেন চান্দিনা উপজেলার ছায়কোট গ্রামের আবুল কালাম, একই গ্রামের মো. সবুজ ও আজমপাড়া গ্রামের মো. তৌফিক। এর মধ্যে হাইকোর্ট সবুজের দণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন দেন।
রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ জানান, যাকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ থেকে যাবজ্জীবন দেওয়া হয়েছে, হত্যাকাণ্ডে তার সরাসরি অংশগ্রহণ ছিল না। তবে ঘটনার সময় তিনি দূরে দাঁড়িয়েছিলেন। হত্যাকাণ্ডের শিকার সুজন মুরাদনগর উপজেলার কালাডুমুর গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে। তবে তিনি মায়ের সঙ্গে চান্দিনা থাকতেন। ২০১২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা নিয়ে মোটরসাইকেল কেনার জন্য বাড়ি থেকে বের হন সুজন।
ওই টাকা নেওয়ার জন্য তার বন্ধু আবুল কালাম, মো. তৌফিক ও মো. সবুজ সেদিন রাতে তাকে নেশাজাতীয় কোমল পানীয় সেবন করিয়ে রাত সাড়ে ১২টার দিকে চান্দিনা মহিলা কলেজের পেছনের একটি জমিতে নিয়ে যান। সেখানে নেওয়ার পর তারা ছুরি দিয়ে গলা কেটে সুজনকে হত্যা করেন এবং মোটরসাইকেল কেনার টাকা নিয়ে যান। পাঁচদিন পর ২১ সেপ্টেম্বর চান্দিনা মহিলা কলেজের পাশের একটি পরিত্যক্ত বাড়ি থেকে সুজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ওই রাতেই তার মা জাহানারা বেগম আবুল কালাম, সবুজ ও তৌফিকের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।
পরের বছর ২০১৩ সালের ৩০ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। পরে বিচার শেষে ২০১৬ সালের ১২ মে কুমিল্লার অতিরিক্ত দায়রা জজ চতুর্থ আদালতের বিচারক নুরুন নাহার বেগম সুজনকে হত্যায় তিন আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেন। রায় ঘোষণার সময় আদালতে আসামিরা উপস্থিত ছিলেন। এরপর মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে পাঠানো হয়। পাশাপাশি আসামিরা জেল আপিল ও ফৌজদারি আপিল করেন।