কোনোভাবেই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতে দেওয়া হবে না : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকার—অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে আধুনিক জ্ঞাননির্ভর সম্প্রীতির জাতি গঠনে সরকার বদ্ধপরিকর। দেশে কোনোভাবেই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতে দেওয়া হবে না। যারা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির মাধ্যমে দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করে রাজনৈতিক সুবিধা নিতে চায়, তাদের যেকোনো মূল্যে দমন করা হবে।’
আজ সোমবার সকালে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের (আইডিইবি) ৫১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও গণপ্রকৌশল দিবসের র্যা লিপূর্ব আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। আইডিইবি থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ খবর জানানো হয়েছে।
এ সময় মন্ত্রী আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু আধুনিক জ্ঞান ও কর্মশক্তিতে বলীয়ান শিক্ষা দর্শনের ভিত্তিতে দেশে সোনার মানুষ তৈরি করতে চেয়েছিলেন। স্বাধীনতা অর্থবহ করার লক্ষে ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করেছিলেন তিনি। কিন্তু স্বাধীনতাবিরোধী চক্র বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে সেই পথ রুদ্ধ করে দেশকে পেছনে ঠেলে দিয়েছে। সেই পশ্চাৎ বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য জননেত্রী শেখ হাসিনা নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর কর্মভিশন বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে দেশ আজ উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের মাথাপিছু আয় দুই হাজার ৫৫৪ ডলারে উন্নীত হয়েছে। শেখ হাসিনার উন্নয়ন দর্শন ধারণ করে বঙ্গবন্ধু’র আরাধ্য সোনার বাংলা নির্মাণে প্রকৌশল কর্মকাণ্ড বাস্তবায়নে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হবে।’
বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক অঙ্গীকার ও কর্মচেতনাকে প্রাধান্য দিয়ে এবারের গণপ্রকৌশল দিবসের প্রতিপাদ্য ‘সম্প্রীতির সমৃদ্ধ জাতি গঠনে আধুনিক জ্ঞান ও কর্মশক্তিতে বলীয়ান শিক্ষা’—নির্ধারণ করায় মন্ত্রী আইডিইবিকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। মন্ত্রী বলেন, ‘প্রযুক্তিনির্ভর দক্ষ বাংলাদেশ নির্মিত হলে অর্থনৈতিক মুক্তি ত্বরান্বিত হবে।’
যারা বাংলাদেশের অগ্রগতির পথ রোধ করতে ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে, তারা কখনও সফল হবে না উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনার সুদৃঢ় নেতৃত্বে দক্ষ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হবে। কারিগরি দক্ষতাসম্পন্ন জনশক্তি নৈতিক দায়বোধ থেকে প্রযুক্তির অন্তর্নিহিত শক্তিকে কাজে লাগিয়ে গণমানুষের জীবনমানে প্রভাব বিস্তার করতে পারলেই প্রযুক্তির আবেদনে সব পশ্চাৎ ধারণার অবসান ঘটবে।’
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘জ্ঞান-বিজ্ঞানের এ যুগে জাতীয় অস্তিত্ব রক্ষায় প্রযুক্তিজ্ঞান সীমিত রাখার সুযোগ নেই। বর্তমান সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে সৃষ্ট বৈপ্লবিক পরিবর্তনের সুযোগ গ্রহণ করে দেশকে সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করার জন্য কারিগরি পেশাজীবীদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করা অপরিহার্য।’
আইডিইবি’র সভাপতি এ কে এম এ হামিদের সভাপতিত্বে র্যাালিপূর্ব আলোচনায় স্বাগত ও সূচনা বক্তব্য দেন আইডিইবি’র সাধারণ সম্পাদক মো. শামসুর রহমান। তিনি বলেন, ‘আধুনিক জ্ঞান ও কর্মশক্তিতে বলীয়ান নাগরিক ছাড়া দেশকে সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দক্ষতা উন্নয়নে কারিগরি শিক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিলেও অজ্ঞাত রহস্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা দর্শন বাস্তবায়নে সফলতার দেখা পাচ্ছে না, যা দুর্ভাগ্যজনক।’
আলোচনার পর বেলুন ও পায়রা উন্মুক্ত করে গণপ্রকৌশল দিবসের র্যা লির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। পরে প্রধান অতিথি, আইডিইবি’র সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে কয়েক হাজার সদস্য প্রকৌশলীর অংশগ্রহণে আইডিইবি ভবন থেকে জিরো পয়েন্ট অভিমুখে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা শুরু হয়। এ সময় জনগণের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য বিভিন্ন শ্লোগান সম্বলিত ফেস্টুন, ব্যানার প্রদর্শন করা হয়।