খাগড়াছড়িতে করোনা উপসর্গ নিয়ে পোশাকশ্রমিকের মৃত্যু, আরো ৯ জন আক্রান্ত
খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলায় করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে মারা গেলেন এক পোশাকশ্রমিক। শারমিন আক্তার নামের ওই নারী চট্টগ্রামের একটি পোশাক কারখানায় কর্মরত ছিলেন। জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তাঁর মৃত্যু হয়।
প্রশাসনের নজরদারি ফাঁকি দিয়ে শারমিন আক্তার ছয় দিন আগে চট্টগ্রাম থেকে মানিকছড়ি উপজেলার যোগ্যছোলা ইউনিয়নের নিজ বাড়িতে আসেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মানিকছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা রতন খীসা। তিনি জানান, ওই পোশাকশ্রমিক জ্বর, সর্দি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে মারা যাওয়ায় করোনা ছিল কি না, তা পরীক্ষা করার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান,অভিভাবকরা মেয়ের অসুস্থতার ধরন নিয়ে স্থানীয় পল্লিচিকিৎসকের কাছে গেলে তিনি উপজেলা হাসপাতালে যোগাযোগ করে চিকিৎসার কথা বলেন। কিন্তু লোকলজ্জার ভয়ে তাঁরা চিকিৎসকের কাছে না গিয়ে জ্বর ও ব্যথার ওষুধ হিসেবে প্যারাসিটামল সেবন করান। ‘করোনা’র উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণ করায় গ্রামের কেউ তাঁর দাফন-কাফনে রাজি না হওয়ায় বিষয়টি শেষ পর্যন্ত প্রশাসনের নজরে আসে। পরে পুলিশের উপস্থিতিতে ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক উপজেলা পর্যায়ে প্রস্তুত রাখা দাফন টিম স্থানীয় কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করে।
মানিকছড়ি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তামান্না মাহমুদ জানান, করোনার উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু হওয়ায় ওই নারীর বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে এবং আশপাশের সবাইকে ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে রাখা হবে।
এদিকে খাগড়াছড়িতে গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ নয়জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৩০ জন। এর মধ্যে এক পুলিশ সদস্যসহ তিনজন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। বাকি ২৭ জন চিকিৎসাধীন।
নতুন আক্রান্তদের মধ্যে ছয়জন পুরুষ ও তিনজন নারী। এদের মধ্যে একজন ১২ বছরের শিশুও রয়েছে। এ নিয়ে জেলার নয়টি উপজেলার মধ্যে মোট সাত উপজেলায় করোনা রোগী শনাক্ত হলো। নতুন আক্রান্তদের মধ্যে দীঘিনালায় একজন, খাগড়াছড়ি সদরে তিনজন, মহালছড়িতে তিনজন, মাটিরাঙ্গায় একজন ও পানছড়িতে একজন রয়েছে।
খাগড়াছড়ির সিভিল সার্জন ডা. নূপুর কান্তি দাশ জানান, খাগড়াছড়িতে ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ নয়জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এদের মধ্যে একজন শিশু ও একজন স্বাস্থ্যকর্মীও রয়েছে। তিনি সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন।