গণঅভ্যুত্থানের ভয়ে সরকারের এ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা : নাসের রহমান
গণঅভ্যুত্থানের ভয়ে এই অবৈধ ফ্যাসিস্ট সরকার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও জোবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির সভাপতি, সাবেক এমপি এম নাসের রহমান।
আজ বুধবার বিকেলে মৌলভীবাজার জেলা শহরের কাশীনাথ আলাউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ মাঠে যুবদলের ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে যুব সমাবেশে এ মন্তব্য করেন এম নাসের রহমান।
এম নাসের রহমান বলেন, হাস্যকর এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানার কারণ হচ্ছে চার কোটি ৩০ লাখ টাকা নাকি উনারা তছরুপ করেছেন। এটা কিসের কী। জনগণ কি তা বুঝতে বাকি আছে? দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশে দেশব্যাপী গণসমাবেশ হচ্ছে। নানা প্রতিকূলতার পরও লাখ লাখ মানুষের সমাগম হচ্ছে গণসমাবেশে। সেখান থেকে সরকারকে জনগণ যে লালকার্ড দেখাচ্ছে, এটার ভয়ে ভীত হয়ে এই অবৈধ সরকার তাদের বিরুদ্ধে হাস্যকর এ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে।
জেলা যুবদলের সভাপতি জাকির হোসেন উজ্জ্বলের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক এম এ মুহিতের পরিচালনায় যুব সমাবেশে বক্তব্য দেন যুবদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোনায়েম মুন্না, জেলা বিএনপির সহসভাপতি রেজিনা নাসের, ফয়ছল আহমদ, সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান, সাংগঠনিক সম্পাদক বকশী মিছবাহ উর রহমানসহ জেলা যুবদলের নেতারা।
নাসের রহমান আরও বলেন, এই সরকার একটি ফ্যাসিবাদী সরকার। যখন দেশের জনগণ আন্দোলনমুখী হয়ে উঠে ঠিক তখনই যেকোনো ছুঁতো খুঁজে বেড়ায় কিছু একটা করার জন্য। এটাও তার একটি ছুঁতো। সারা দেশে এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল হচ্ছে। বর্তমান সরকারের দিন শেষ হয়ে যাচ্ছে। দেশের সব মানুষ বুঝতে পারছে।
সরকার চেয়েছিল ইভিএম দিয়ে নির্বাচন করতে। কিন্তু ওই দিন পর্যন্ত যেতে পারবেন না। তার আগেই এই সরকারকে বিদায় নিতে হবে মন্তব্য করে নাসের রহমান বলেন, এই সরকারের ক্ষমতায় থাকা না থাকার মাঝখানে খালি একটা জিনিসই আছে, সেটা হচ্ছে পুলিশ। আর কিছুই নেই। আগামীকাল যদি পুলিশ বলে আমরা নিরপেক্ষ হয়ে গেলাম। তখন চারদিকে আর আওয়ামী লীগ খুঁজে পাওয়া যাবে না। স্বৈরাচার কখনও সোজা পথে যায় না। এটা পৃথিবীর ইতিহাসে নেই। অনেক রক্ত ঝরিয়ে স্বৈরাচারের পতন ঘটে। তাদের সামনে এখন দুটি পথই খোলা। ১৪ বছর ক্ষমতা চালিয়ে যাই করেন এখন সসম্মানে বিদায় নিবে না গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে গদি ছাড়বে।
এম নাসের রহমান বলেন, এটা নিশ্চিত—এ দেশে শেখ হাসিনার অধীনে আর কোনো নির্বাচন হবে না। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনেই আগামী নির্বাচন হবে। আর অবশ্যই সেই নির্বাচনে বেগম জিয়া অংশ নেবেন। তারেক রহমান দেশে ফিরবেন।
গত কয়েকদিন ধরে জেলাজুড়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে ছিল উৎসবের আমেজ। সমাবেশে বক্তারা আগামী ২০ নভেম্বর সিলেটে বিএনপির গণসমাবেশ সফল করারও আহ্বান জানান।
আজ সকাল থেকেই জেলার সবকটি উপজেলা থেকে নেতাকর্মীরা দলীয় পতাকা, ক্যাপ, ব্যানার, রং-বেরঙের ফেস্টুনসহ দলীয় নেতাদের ছবি ও স্লোগান সংবলিত প্লাকার্ড নিয়ে আসতে থাকে। সমাবেশ শুরুর আগেই কয়েক হাজার নেতাকর্মী সমাবেশস্থলে এসে পৌঁছায়। স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত করে অনুষ্ঠানস্থলে আসতে থাকে নেতাকর্মীরা।
বিভিন্ন উপজেলা থেকে আগত নেতাকর্মীরা অভিযোগ করে, তারা আসার পথে নানা স্থানে পুলিশ গাড়ি আটকে সমাবেশে আসতে বাধা দেয়। কয়েকটি স্থানে গাড়ি আটকেও রাখে। শহরের বিভিন্ন মোড়ে জলকামানসহ পুলিশের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়।