ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবিলায় প্রস্তুত খুলনা
ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবিলায় খুলনায় ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (১১ মে) বিকেল ৪টার দিকে খুলনা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন।
সভায় জানানো হয়, ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবিলায় খুলনায় ৪০৯টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে দুই লাখ ৭৩ হাজার ৮৫০ জন মানুষ আশ্রয় নিতে পারবে। তাদের জন্য প্রয়োজনীয় শুকনা খাবার, পানি, শিশুখাদ্য ও ওষুধের ব্যবস্থা করা হয়েছে। গবাদি পশু রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রস্তুত রয়েছে ফায়ার সার্ভিসের তিনটি রেসকিউ টিম (উদ্ধারকারী দল)।
এছাড়া নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, পুলিশের সদস্যরা নিরাপত্তায় কাজ করবেন। উপকূলের ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ মেরামতে কাজ চলছে। জেলার ৯৫ ভাগ ধান কাটা হয়েছে। ঝড়ের পূর্ব সব ধান কাটা হবে। আর পাকা আম পাড়ার জন্য বলা হয়েছে। মানুষকে সচেতন করতে কাজ করছে রেড ক্রিসেন্ট ও সিপিপিসহ বিভিন্ন এনজিও সংস্থার স্বেচ্ছাসেবকরা। খোলা হয়েছে জেলা প্রশাসনের কন্ট্রোল রুম।
খুলনা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ আবহাওয়াবিদ আমিরুল আজাদ বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় মোখা নিয়ে ছয় ঘণ্টা পর পর আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। আগামী রোববার (১৪ মে) রাতে এই ঝড় উপকূলে আঘাত হানতে পারে। খুলনার উপকূলে যদি আঘাত না হানে তাহলে এই অঞ্চলে হালকা বাতাস ও বৃষ্টি হবে।’
সভায় খুলনা জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আব্দুল করিম বলেন, ‘আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। সব সময় মনিটরিং করা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় ত্রাণসামগ্রী, শুকনা খাবার, পানি ও শিশুখাদ্য মজুত রয়েছে।’
খুলনা সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডাক্তার শেখ সাদিয়া মনোয়ারা উষা বলেন, ‘মানুষের চিকিৎসাসেবায় ১১৬টি মেডিকেল টিম, প্রয়োজনীয় ওষুধ ও অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রয়েছে। সেই সঙ্গে আমাদের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে।’
খুলনা জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় মোখার পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে সভা করা হয়েছে। জেলার ৪০৯টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে আসা মানুষদের জন্য শুকনা খাবার, পানি, চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। খোলা হয়েছে নিয়ন্ত্রণকক্ষ। এছাড়া নির্দেশনা অনুযায়ী এসএসসি পরীক্ষার মালামাল সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কৃষি, প্রাণি ও মৎস্য বিভাগকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড প্রস্তুত রয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ মেরামতের জন্য বলা হয়েছে। প্রতি মুহূর্তে ঘূর্ণিঝড়ের গতিবিধি দেখা হচ্ছে। দুর্যোগপূর্ব সার্বিক প্রস্তুতি আমরা গ্রহণ করেছি।’
সভা পরিচালনা করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) পূলক কুমার মণ্ডল। সভায় জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, পৌর মেয়র, উপজেলা চেয়ারম্যান, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, এনজিও সংস্থার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।