জমি নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে গুলিতে একজন নিহত
শরীয়তপুরের জাজিরা ও মাদারীপুরের শিবচর সীমান্তে জমি নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময় গুলিতে ফরহাদ নামের এক অটোবাইক চালক নিহত হয়েছেন। একই ঘটনায় আরো দুজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে সাতজনকে আটক করেছে জাজিরা থানা পুলিশ।
নিহত ফরহাদ উপজেলার পশ্চিম নাওডোবা তাহের মল্লিককান্দি এলকার বাসিন্দা।
নিহত ফরহাদের স্বজনদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, উপজেলার পশ্চিম নাওডোবা তাহের মল্লিককান্দি গ্রামের জুলহাস বেপারী ও কালামিয়া মল্লিকের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এই বিরোধ মীমাংসায় আজ বুধবার সকাল ৯টার দিকে সালিশ হওয়ার কথা ছিল। জুলহাস বেপারীর পক্ষ সালিসে উপস্থিত না হওয়ায় মাতবররা তাদের সঙ্গে কথা বলে আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি পুনরায় তারিখ নির্ধারণ করে। আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কালামিয়া মল্লিক বিরোধীয় জমিতে ভ্যাকু দিয়ে মাটি কাটতে যান। এ সময় জুলহাস বেপারী ও তাঁর লোকজন আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে কালামিয়ার ও তাঁর লোকজনের ওপর হামলা চালায়। এতে গুলিতে ফরহাদ মল্লিক, রেজু মল্লিক ও দিদার মুন্সী গুলিবিদ্ধ হয়ে মারাত্মক আহত হন।
স্থানীয় লোকজন আহতদের উদ্ধার করে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক অটোচালক ফরহাদকে মৃত ঘোষণা করেন। অপর আহত দুই ব্যক্তিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় লাভলু মল্লিক বলেন, ‘জুলহাস বেপারী, স্থানীয় সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল গোমস্তা ও তার সমর্থকরা কালামিয়া মল্লিকের লোকজনের ওপর হামলা চালায়। এ সময় হামলাকারীরা গুলি করে ফোরহাদ মল্লিককে হত্যা করেছে। আমরা হত্যাকারীদের বিচার দাবি করছি।’
স্থানীয় সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল গোমস্তা বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসার কাজে আমি মাদারীপুর অবস্থান করছি। শুনেছি দুই পক্ষের মারামারিতে একজন নিহত হয়েছেন। ঘটনার পর নিহতের স্বজনরা ঠাণ্ডু ফকির, সুলতার বেপরী, বাদশা হাওলাদারের বাড়ি-ঘরসহ বেশ কয়েকটি বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে। এর বেশি কিছু আমি জানি না।’
জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি গুলিবিদ্ধ হয়ে ফরহাদের মৃত্যু হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।’
জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজহারুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘সংঘর্ষের ঘটনায় শর্টগানের গুলিতে একজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে জাজিরা থেকে তিনজন ও মুন্সীগঞ্জ থেকে চারজনকে আটক করা হয়েছে। সংঘর্ষে ব্যবহৃত দেশীয় অস্ত্র জব্দ করা হয়েছে। মামলার প্রক্রিয়া চলছে। পরবর্তী সময়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’