ড্রাগন চাষে স্বপ্ন পূরণ নাছিমার
কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে কাদুটির চাঁদসার গ্রাম। গ্রামটির পথ দিয়ে হাঁটলেই দূর দেখা মিলে ক্যাকটাস জাতীয় গাছের। তবে, কাছে যেতেই দেখা যাবে গাছগুলোতে রয়েছে লাল ফলের। মূলত এগুলো পুষ্টিকর ড্রাগন ফলের গাছ। বাগানটির মালিক নাছিমা বেগম।
বাগান নিয়ে কথা হলে নাছিমা বেগম জানান, মাত্র ১০টি চারা দিয়ে ২০১৯ সালে এ বাগানের সূচনা করেছিলেন তিনি। বর্তমানে বাগানটিতে রয়েছে অন্তত পাঁচ হাজার গাছ। বাগানটির গাছের চারা বিক্রি হচ্ছে প্রতিদিন। একইসঙ্গে সপ্তাহে ড্রাগন ফল বিক্রি হচ্ছে দুই থেকে তিন মণ।
নাছিমা বেগম বলেন, ‘পাইকারি বাজারে কেজি প্রতি ড্রাগন ফল বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকা দরে। আর প্রতিটি চারা বিক্রি করছেন ৫০ টাকা দরে। নিজের জেলা বাদেও দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় যাচ্ছে আমার চারা।’
এই নারী উদ্যোক্তা বলেন, ‘গত বছর ২১ শতাংশ জমিতে ড্রাগন ফলের চাষ করেছিলাম। বিক্রি হয়েছিল দুই লাখ টাকা। আর এ বছর ৮০ শতাংশ জমিতে চাষাবাদ করেছি। ড্রাগন চাষ করে আমার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। আশা করছি, এ বছর পাঁচ লাখ টাকার ফল বিক্রি হবে। প্রতিদিন এলাকার অনেক কৌতূহলী মানুষ আসে বাগান দেখতে। অনেকেই চারা কিনছেন, চাষাবাদও করছেন।’
সুস্বাদু ও দামি ফল ড্রাগন। স্বল্প সময়ে অল্প পুঁজিতে লাভ বেশি হওয়ায় দেশজুড়েই বাড়ছে এ ফলের চাষ। সেখান থেকে বাদ যায়নি কুমিল্লাও। জেলাটিতে ড্রাগনের চাহিদা বাড়ায় বর্তমানে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে ক্যাকটাস জাতের এ ফলের।
কুমিল্লা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, আবহাওয়া ও মাটি উপযোগী থাকায় জেলাটিতে লাল, হলুদ এবং সাদা ড্রাগন ফল চাষ বাড়ছে। চারা বা কাটিং রোপণের ১০ থেকে ১৫ মাসের মধ্যেই ফল সংগ্রহ করা যায়। এপ্রিল-মে মাসে ফুল আসে, যা শেষ হয় নভেম্বর মাসে গিয়ে। ফুল আসার ৩০ থেকে ৪০ দিনের মধ্যে ফল সংগ্রহ করা যায়। নভেম্বর মাস পর্যন্ত ফুল ফোঁটা এবং ফল ধরা অব্যাহত থাকে। সঠিক পরিচর্যা করতে পারলে একটি গাছ হতে ৪০ বছর বয়স পর্যন্ত ফলন পাওয়া সম্ভব।
এ বিষয়ে কুমিল্লা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, ‘কুমিল্লার আবহাওয়া এবং মাটি ড্রাগন ফল চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। কুমিল্লায় বাউ-১ ও বাউ-২ জাতের ড্রাগনের চাষ হচ্ছে। বাজার মূল্য বেশি এবং অধিক পুষ্টি সমৃদ্ধ হওয়ায় এ ফলের চাষ বৃদ্ধির জন্য আমরা প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছি।’