দুদকের মামলায় জামিন পেলেন মীর নাছির
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় দণ্ডিত বিএনপির ভাইসচেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিনকে জামিন দিয়েছেন আপিল বিভাগ। করোনাভাইরাসজনিত বিশেষ পরিস্থিতি বিবেচনায় আপিল বিভাগ মীর নাছিরকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়ে তাঁর অর্থদণ্ড স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন ভার্চুয়াল আপিল বিভাগ আজ রোববার এই আদেশ দেন।
আদালতে মীর নাছিরের পক্ষে আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী ও রুহুল কুদ্দুস শুনানি করেন। দুদকের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
তাঁর আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস বলেন, আপিল বিভাগের এই আদেশের ফলে মীর নাছিরের কারামুক্তিতে আইনগত বাধা নেই। দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করে আপিল বিভাগে জামিন চেয়ে মীর নাছিরের করা আবেদন মঞ্জুর করে আপিল বিভাগ এ আদেশ দিয়েছেন।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের বিশেষ পরিস্থিতি বিবেচনায় মীর নাছিরকে জামিন দেওয়া হয়েছে বলে জানান দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
দুদকের ওই মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে মীর নাছিরের ১৩ বছরের সাজা ও অর্থদণ্ড হয়েছিল। দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে তিনি হাইকোর্টে আপিল করে প্রথমে খালাস পান। পরে এর বিরুদ্ধে দুদক আপিল বিভাগে আবেদন করে।
দুদকের ওই আবেদন মঞ্জুর করে ২০১৪ সালের ৪ জুলাই রায় দেন আপিল বিভাগ। রায়ে মীর নাছিরকে দুদকের মামলায় খালাস দিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বাতিল করা হয়। একই সঙ্গে মীর নাছিরের করা আপিল পুনরায় হাইকোর্টে শুনানির নির্দেশ দেওয়া হয়। পুনরায় শুনানি শেষে ২০১৯ সালের ১৯ নভেম্বর হাইকোর্ট রায় দেন। রায়ে বিচারিক আদালতের সাজা বহাল রাখা হয়। একই সঙ্গে হাইকোর্টের রায় বিচারিক আদালতের গ্রহণের দিন থেকে পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে মীর নাছিরকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
এরপর ওই মামলায় উচ্চ আদালতের নির্দেশে গত ৮ নভেম্বর মীর নাছির বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। সেদিন তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।
আত্মসমর্পণের পরে মীর নাছির আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল দায়েরের পাশাপাশি জামিন চেয়ে আবেদন করেন। জামিন আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ১৪ ডিসেম্বর আপিল বিভাগ ৩ জানুয়ারি শুনানির জন্য দিন রাখেন। এর ধারাবাহিকতায় আজ বিষয়টি কার্যতালিকায় ওঠে।
২০০৭ সালের ৬ মার্চ অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে মীর নাছির ও তাঁর ছেলে মীর হেলালের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় ওই মামলাটি করে দুদক। মামলায় ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-২ একই বছরের ৪ জুলাই রায় দেন। রায়ে মীর নাছিরকে ১৩ বছরের কারাদণ্ড এবং ৫০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরো দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।