নওগাঁয় হত্যা মামলার আসামি গ্রেপ্তার
নওগাঁর মান্দায় চাঞ্চল্যকর এমরান হোসেন রানা (৩৮) হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি মিজানুর রহমান রঞ্জুকে (২৭) তার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃত মিজানুর মান্দার স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা কামরুজ্জামান মাস্টার হত্যা প্রচেষ্টা, ধর্ষণ চেষ্টা এবং নারী ও শিশু নির্যাতনসহ প্রায় চারটি মামলার আসামি।
আজ বুধবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে মিজানুর রহমানকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। এ মামলায় অন্যদের সঙ্গে তার বাবা রফিকুল ইসলাম চান্দু এবং ছোট ভাই রায়হানও এজাহারভুক্ত আসামি। মিজানুর রহমান গ্রেপ্তার হওয়ার খবরে সতীহাট বাজারে মিষ্টি বিতরণ করেছে স্থানীয়রা। তার বিরুদ্ধে মারপিট-খুন, জখম, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজিসহ স্থানীয়দের বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয়রা হত্যাকারী মিজানসহ সংশ্লিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
মান্দা থানা সূত্রে জানা যায়, গত ১২ নভেম্বর রাত সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার গনেশপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে চেয়ারম্যান প্রার্থী শফিকুল ইসলাম চৌধুরী এবং হানিফ উদ্দিন মণ্ডলের সমর্থকদের মধ্য স্থানীয় সতীহাট বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় শফিকুল ইসলাম চৌধুরী বাবুলের সমর্থক এমরান হোসেন রানাকে মিজানুর রহমান ও তার বাবা রফিকুল ইসলাম চান্দুসহ অন্যরা বিভিন্ন রকমের ধারালো অস্ত্র ও হকিস্টিক দিয়ে উপর্যপরি আঘাত করে। এতে রানার মৃত্যু হয়েছে জেনে তারা তাকে ফেলে চলে যায়। স্থানীদের সহায়তায় মৃতপ্রায় এমরান হোসেন রানাকে প্রথমে নওগাঁ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল ও পরবর্তীতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানেই তার মৃত্যু হয়। ওই সংঘর্ষে উভয়পক্ষের আটজন আহত হন।
এ ঘটনায় নিহত রানার মা রেজিয়া বেগম বাদী হয়ে ১৯ নভেম্বর মান্দা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শন (এসআই) ফারুক হোসেন গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে মান্দা উপজেলার গনেশপুর গ্রাম থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।
নিহত রানার মা রেজিয়া বেগম বলেন, ‘আমার মুক্তিযোদ্ধা স্বামীর মৃত্যুর পর একমাত্র ছেলে এমরান হোসেন রানা ছিল আমার বেঁচে থাকার অবলম্বন। মিজানুর রহমানসহ যারা আমার ছেলেকে হত্যা করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই এবং ফাঁসি চাই।’
গনেশপুর ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘মিজানুর রহমান এবং তার পরিবার সন্ত্রাসী পরিবার। ছিনতাই, চাঁদাবাজি, মারপিট, খুন-জখম, টাকার বিনিময়ে অপহরণ, ডিপটিউবয়েল, জমি ও দোকানঘর দখল করায় তার কাজ। গনেশপুরসহ পার্শ্ববর্তী ইউনিয়নের সাধারণ মানুষ তাদের দ্বারা বিভিন্নভাবে নির্যাতিত। জীবনের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। এদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া দরকার।’
মান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহিনুর রহমান বলেন, ‘এই মামলায় মিজানুর রহমান নামের একজন আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের ধরতেও আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’