নরসিংদীতে করোনা উপসর্গে মৃত্যু, লাশ নিল না স্বজনরা
নরসিংদীতে করোনা উপসর্গ নিয়ে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে জেনে স্বামী ও বাবার বাড়ির লোকজন মৃতদেহ গ্রহণ করেনি। অবশেষে খবর নরসিংদী সদর থানা পুলিশ হাসপাতাল থেকে লাশ গ্রহণ করে। পরে জানাজা শেষে শুক্রবার দুপুরে পৌর কবরস্থানে নিহতের লাশ দাফন করেছে পুলিশ।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে নরসিংদী সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই নারী (২৭) মারা যান।
ওই নারী ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার এক প্রবাসীর স্ত্রী। তিনি নরসিংদী পৌরসভা এলাকায় ছেলেকে নিয়ে ভাড়া থাকতেন।
পুলিশ জানায়, ওই নারী গত বৃহস্পতিবার দুপুরে হঠাৎ মাথা ব্যথা ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে নরসিংদী সদর হাসপাতালে ভর্তি হন। রাত ৯টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু হয়েছে জেনে তাঁর স্বামীর বাড়ি ও বাবার বাড়ির লোকজন তাঁর মরদেহ বুঝে নিচ্ছিল না।
বিষয়টি পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদারের নজরে এলে তিনি নরসিংদী সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দুজ্জামানকে লাশ দাফনের ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার দুপুরে নরসিংদী পৌর কবরস্থানে পুলিশের সদস্যরা ওই নারীর মরদেহ দাফন করেন।
সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি সৈয়দুজ্জামান বলেন, ‘বৈশ্বিক মহামারিতে মানুষের মধ্যে মানবিক বিপর্যয় ঘটেছে। স্ত্রী মারা গেলে স্বামী লাশ নেয় না। মৃত্যুর পর স্বজনরা লাশ গ্রহণ করে না বিষয়টি ভাবা যায়? কতটা অমানবিক। যেখানে যত বেশি অমানবিকতা, সেখানেই পুলিশের মানবতা। সেই মানবতা বোধ থেকেই পুলিশ সুপার স্যারের নির্দেশে আমরা দাফন-কাফন সম্পন্ন করি।’
জেলা পুলিশের মিডিয়া সমন্বয়ক ও পরিদর্শক রুপণ কুমার সরকার বলেন, ‘করোনার কারণে অতি আপনজনও লাশের পাশে আসেনি। কিন্তু মানবতার ফেরিওয়ালা পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদারের নির্দেশে পুলিশ সদস্যরা কবর খোঁড়া থেকে শুরু করে জানাজা পড়ান তারপর ওই নারীর মরদেহ দাফন করেন।’