নরসিংদীতে সাংবাদিকের ওপর হামলা
নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার আমিরগঞ্জে এসএ টিভির জেলা প্রতিনিধি সজল ভূঁইয়াকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে আমিরগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন খান ও তাঁর বাহিনী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটান।
গুরুতর আহতাবস্থায় সজল ভূঁইয়াকে উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন জেলার সাংবাদিক নেতারা। একই সঙ্গে অভিযুক্ত চেয়ারম্যানের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করেছেন।
এসএ টিভির সাংবাদিক আহত সজল ভূঁইয়া জনান, বৃহস্পতিবার এশিয়ান টেলিভিশনের সিনিয়র রিপোর্টার বাতেন বিপ্লব ঢাকা থেকে নরসিংদীতে আসেন চাল চুরি, ১০ টাকার চাল বিক্রয় ও কার্ডধারী সুবিধাভোগীদের নিয়ে প্রতিবেদন করার জন্য। ঢাকা থেকে আসা রিপোর্টার তাঁর পূর্বপরিচিত হওয়ায় তাঁকে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে সহযোগিতা করছিলেন। বাতেন সন্ধ্যার দিকে আমিরগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যানের সাক্ষাৎকার নিতে যান।
সাক্ষাৎকার নিতে পৌঁছলে আমিরগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন খান, ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি বাশার, সাধারণ সম্পাদক শরীফ ও রুবেল, নওয়াব, শহীদসহ প্রায় ২০ জন সজলকে গাড়ি থেকে নামিয়ে এলোপাতাড়ি পেটাতে থাকে। পিটিয়ে তাঁকে রক্তাক্ত জখম করে। পরে বাতেন বিপ্লবের সঙ্গে থাকা লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে পাঠান।
সজল ভূঁইয়া জানান, তিনি আমিরগঞ্জ ইউনিয়নের করিমগঞ্জে একটি এলপিজি ফিলিং স্টেশন নির্মাণ করছেন। সেখান জমি-সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আমিরগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন খানের সঙ্গে তাঁর বিরোধ চলে আসছিল।
সজল ভূঁইয়ার অভিযোগ, এলপিজি ফিলিং স্টেশন নির্মাণকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন সময় চাঁদা দাবি করতেন চেয়ারম্যান। তাঁকে চাঁদা না দেওয়ায় বিভিন্ন সময় ছাত্রলীগের নেতাসহ সন্ত্রাসী বাহিনী পাঠিয়ে কাজ বন্ধ করে দিতেন। এসব ঘটনায় চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন সজল ভূঁইয়া।
এর আগে একবার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে নির্মাণাধীন প্রতিষ্ঠানে হামলা চালানোর পর এসএ টিভির ক্যামেরাম্যান আহত হয়। এ ব্যাপারে রায়পুরা থানায় একটি মামলা করা হয়। এর কিছুদিন পর এসএ টিভির জেলা প্রতিনিধি সজল ভূঁইয়াকে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে নরসিংদীর আদালতে আমিরগঞ্জের ইউপি চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন খানকে প্রধান আসামি করে একটি মামলা করা হয়। এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর ওপর এই হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে জানান সজল ভূঁইয়া।
তবে সাংবাদিকের ওপর হামলাসহ সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আমিরগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন খান। তিনি বলেন, ‘সজল একটি এলপিজি পাম্প করছে। সেখানে নওয়াব নামের গ্রামের একজনের জমি দখল করে মাটি ভরাট করছেন। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান সালিশও করেছেন। কিন্তু তিনি বিচার মানেন না। গতকাল তিনি লোকজন নিয়ে এসে আওয়ামী লীগ অফিসে আমাদের ওপর হামলা করেন। সেখানে দলের নেতাকর্মীরা ছিলেন। পরে মারপিট হয়। সেখানে আমাদের দুজন লোকও আহত হয়েছে।