নিষ্প্রাণ ভাষা শহীদ সালাম স্মৃতি জাদুঘর ও গ্রন্থাগার
ফেব্রুয়ারি এলে বাড়ে কদর, শুরু হয় পরিচ্ছন্নতা ও সাজসজ্জা। বছরের অন্যান্য দিন কেউ রাখে না খবর। ফেনীর সালাম নগরের নিষ্প্রাণ পড়ে থাকে ভাষা শহীদ আবদুস সালাম স্মৃতি জাদুঘর ও গ্রন্থাগার। নতুন বইয়ের অভাবে বাড়ে না পাঠক, জাদুঘরেও নেই তেমন দর্শনার্থী। অথচ দৃষ্টিনন্দন করা গেলে প্রাণ চঞ্চল হয়ে উঠতো সালামনগর- এমনটাই দাবি স্থানীয়দের।
৫২’র ভাষা আন্দোলনে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মাতৃভাষা বাংলা চাই শ্লোগানে রাজপথে নামলে ২১ ফেব্রুয়ারি পুলিশের গুলিতে আহত হন সালাম। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজে দীর্ঘ দেড় মাস চিকিৎসাধীন থেকে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। তাঁর স্মৃতি রক্ষায় দাগনভুঞা উপজেলার মাতুভুঞা ইউনিয়নের গ্রামে গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর নির্মাণ করা হয়।
পাড়াগাঁয়ের পরিবেশ বলে সারা বছরই নিষ্প্রাণ থাকে এ দুটি প্রতিষ্ঠান উল্লেখ করে স্থানীয়রা জানান, নতুন প্রজন্মের কাছে শহীদ সালামের স্মৃতি তুলে দরকার। অথচ গ্রন্থাগারে রয়েছে পুরোনো কিছু বই, আর জাদুঘরে ভাষা শহীদের একটি ছবি ছাড়া নেই কোনো স্মৃতিচিহ্ন। এতে হতাশ হয়ে ফিরে যান দর্শনার্থীরা।
গ্রন্থাগার সূত্রে জানা যায়, সেখানে প্রায় সাড়ে তিন হাজার বই আছে। প্রতিদিন গড়ে ১৫ জনের মতো দর্শনার্থী আসেন। তবে পাঠক নেই বললেই চলে। প্রতিদিন গড়ে ৫ থেকে ৬ জন পাঠক আসা-যাওয়া করেন। তাঁরা সময়োপযোগী বই খোঁজেন।
গ্রন্থাগারের পাঠকরা বলেন, বইগুলো অনেক পুরাতন। নতুন বই সংরক্ষণ করা হলে পাঠক বাড়বে।
এলাকাবাসীর দাবি, সালামের নামে এলাকায় তেমন কিছুই করা হয়নি। একটা লাইব্রেরি ও জাদুঘর আছে। সেখানেও নেই নতুনত্ব। সালামের জন্মবার্ষিকী, মৃত্যুদিন নিরবেই কেটে যায়। অথচ সালামের নামে অনেক কিছুই করা যেত।
দাগনভুঞা উপজেলা চেয়ারম্যান দিদারুল কবির রতন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘এই সালাম নগরকে বাংলার মানুষের কাছে দর্শনীয় স্থান করার জন্য কিছু পরিকল্পনা আমাদের নেওয়া প্রয়োজন। আমরা এরই মধ্যে সালাম নগরের নির্দেশিকা গেইট করার জন্য উপজেলা পরিষদ থেকে। ফোর লেনের কাজ শুরু হওয়ার কারণে সেটি বন্ধ আছে।’ ফোর লেনের কাজ শেষ হলে নির্দেশিকা গেটের পাশাপাশি আর কী কী করা যায় তার উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদুল হাসান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘একুশে ফেব্রুয়ারির জেলা পর্যায়ের আলোচনা সভা আমরা সালাম নগরেই রেখেছি। সেখানে আলোচনা সভা হলে জনগণের মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্য তৈরি হবে। সবাই জানতে পারবে। এ ছাড়া সেখানে আমরা যখন যাব, তখন আমরা পর্যালোচনা করে ওই স্থানের ইতিহাস ঐতিহ্যগুলোকে, সালামের অবদানকে জনগণের কাছে ফুটিয়ে তোলার জন্য আর কী কী করা যায়, তা যাচাই বাছাই করে দেখবো।’