পদ্মা-মেঘনা-যমুনায় পানি বাড়ছে, তবে বন্যার শঙ্কা নেই
দেশের ব্রহ্মপুত্র-যমুনা-পদ্মা-মেঘনাসহ প্রধান প্রধান সাতটি নদ-নদীর পানি বাড়ছে। এসব নদ-নদীর পানি আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত বাড়তে থাকবে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
তবে এতে এসব নদী অববাহিকায় বন্যার কোনো আশঙ্কা নেই বলে আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় এনটিভি অনলাইনকে বলেছেন বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া। তিনি আরো বলেন, ‘এখন যেসব নদ-নদীর পানি বাড়ছে তা আগামী দু-চার দিনের মধ্যেই নেমে গিয়ে স্বাভাবিক হয়ে যাবে। এতে বন্যার কোনো আশঙ্কা নেই।’
এদিকে আজ শুক্রবার এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আপার মেঘনা অববাহিকার সুরমা, কুশিয়ারা, সোমেশ্বরী এবং কংস নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় কুড়িগ্রাম পয়েন্টের ধরলা নদীর পানি পাঁচ সেন্টিমিটার কমেছে। এ ছাড়া এখনো বিপৎসীমার উপরে ৩০ সেন্টিমিটার পানি রয়েছে। সারিয়াকান্দি পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি ৩৫ সেন্টিমিটার বেড়েছে। এ ছাড়া এখনো পানি বিপৎসীমার সাত সেন্টিমিটার উপরে রয়েছে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া পানি বৃদ্ধির এই প্রবণতাকে সাময়িক বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, কুড়িগ্রামের ধরলা নদীর পানিও বিদৎসীমার উপরে রয়েছে। গত জুন থেকে এই অঞ্চলে এ নিয়ে চার দফা বন্যা হয়েছে। ফলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধগুলো দুর্বল রয়েছে। ফলে এই অঞ্চলের নদীভাঙন বাড়তে পারে।
পাশাপাশি নেত্রকোনা ও সুনামগঞ্জ অঞ্চলের হাওরে এই সময়ে এমনিতেই পানি থাকে। টানা বৃষ্টির কারণে এই পানি আরো বেড়েছে। তবে এতে সেখানে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার মতো কোনো অবস্থা নেই বলে জানান নির্বাহী প্রকৌশলী।
আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া আরো বলেন, অক্টোবরের মাঝামাঝি দেশের নদ-নদীতে আবার পানি বাড়তে পারে। সাধারণত এই সময়ে পানি বৃদ্ধি পেলে একটু স্থায়ী হয়। কিন্তু তাতেও বন্যার আশঙ্কা নেই। আর হাওরের পানি এমনিতেই নভেম্বরে নেমে যাবে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
এদিকে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, গঙ্গা নদীর পানি সমতল স্থিতিশীল আছে; যা আগামী ২৪ ঘণ্টায় এই অঞ্চলের সব প্রধান নদীসমূহের পানি সমতল হ্রাস পেতে পারে।
এদিকে আগামী ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর কাজিপুর পয়েন্টে পানি সমতল বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের পর্যবেক্ষণাধীন পানি সমতল স্টেশন ১০১টির মধ্যে ৬৩টিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে ও কমেছে ৩৪টিতে।
গত ২৪ ঘণ্টায় গাইবান্ধা স্টেশনে ২১০ মিলিমিটার, পঞ্চগড় স্টেশনে ১০৩ মিলিমিটার, লরেরগড় স্টেশনে ৯৫ মিলিমিটার, কুড়িগ্রাম স্টেশনে ৬২ মিলিমিটার, জামালপুর স্টেশনে ৫৩ মিলিমিটার, ডালিয়া স্টেশনে ১১২ মিলিমিটার, মহাদেবপুর স্টেশনে ৭৩ মিলিমিটার, রাজশাহী স্টেশনে ৫৯ মিলিমিটার, ফরিদপুর স্টেশনে ৫৩ মিলিমিটার, আত্রাই স্টেশনে ৬২ মিলিমিটার, চাঁপাইনবাবগঞ্জ স্টেশনে ৫৮ মিলিমিটার ও ব্রাহ্মণবাড়ীয়া স্টেশনে ৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে।