পদ্মা সেতু চালু হবে ২০২২ সালের জুনে : মন্ত্রিপরিষদ সচিব
মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেছেন, ‘২০২২ সালের জুন মাসের মধ্যে পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে যানবাহন চলাচল শুরু হবে। এটি বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় এক যুগান্তকারী পরিবর্তন আনবে। আমি আট বছর সেতু বিভাগের সচিব ছিলাম। ফলে আমি এখনো এটিকে দেখাশোনা করি।’
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এক মতবিনিময় সভায় মন্ত্রিপরিষদ সচিব এ কথা বলেন। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ আয়োজিত কোভিড-১৯ মোকাবিলা এবং টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে বাংলাদেশ সরকারের নেওয়া প্রণোদনা প্যাকেজের ওপর এ মতবিনিয় সভার আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। বিশেষ অথিতি ছিলেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের সিনিয়র গবেষক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. ফেরদৌসী নাহার, ইকোনমিক রিসার্চ গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক ড. সাজ্জাদ জহির, মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট ব্যারিস্টার নিহাদ কবির প্রমুখ। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আবদুর রউফ তালুকদার।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘পদ্মা সেতু এখন একটি বাস্তবতা। এ সেতু দেশের জন্য এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।’
আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে সেতুর ১২ ও ১৩ নম্বর পিলারের ওপর ‘টু-এফ’ নামের সর্বশেষ স্প্যানটি বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় সেতুর ছয় দশমিক ১৫ কিলোমিটার। এর আগে গতকাল বুধবার দুপুরে স্প্যানটি মুন্সীগঞ্জের মাওয়া কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে রওনা হয়ে সন্ধ্যায় নির্ধারিত পিলারের কাছে পৌঁছায়।
২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিলারের ওপর প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় পদ্মা সেতু। সে হিসেবে তিন বছর দুই মাস ১০ দিনে বসানো হলো সেতুর সবকটি স্প্যান।
পদ্মা সেতুর সার্বিক অগ্রগতি সাড়ে ৮২ শতাংশের বেশি। মূল সেতুর কাজের অগ্রগতি ৯১ শতাংশ। আর্থিক অগ্রগতি ৮৮ দশমিক ৩৮ শতাংশ। মূল সেতুর কাজের চুক্তিমূল্য ১২ হাজার ১৩৩ দশমিক ৩৯ কোটি টাকা। এ পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ১০ হাজার ৭২৩ দশমিক ৬৩ কোট টাকা। নদীশাসন কাজের বাস্তব অগ্রগতি ৭৫ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং আর্থিক অগ্রগতি ৬৫ দশমিক ১৭ শতাংশ। নদীশাসন কাজের চুক্তিমূল্য আট হাজার ৭০৭ দশমিক ৮১ কোটি টাকা এবং এ পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে পাঁচ হাজার ৬৭৪ দশমিক ৪৮ কোটি টাকা। সংযোগ সড়ক ও সার্ভিস এরিয়ার বাস্তব কাজের অগ্রগতি শতভাগ।
২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। দুটি সংযোগ সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণ করেছে বাংলাদেশের আবদুল মোমেন লিমিটেড।