পদ্মা সেতু নিয়ে বিএনপি নেতাদের ওপেন চ্যালেঞ্জ দিলেন আরাফাত
পদ্মা সেতু নির্মাণ ব্যয় নিয়ে ‘মিথ্যা প্রচারণা’ চলছে বলে মন্তব্য করে সেগুলোর চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ এ. আরাফাত। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা ৪ মিনিটে নিজের ভেরিফাইড পেজে এক স্ট্যাটাসে এ চ্যালেঞ্জ জানান তিনি। সেখানে আরাফাত পদ্মা সেতুর নির্মাণ ব্যয় নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ অন্যান্য নেতাদের ওপেন চ্যালেঞ্জ করেন।
‘পদ্মা সেতু নির্মাণ ব্যয় নিয়ে স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর মিথ্যা প্রচারণাগুলোকে চ্যালেঞ্জ করতে চাই’ শিরোনামে লেখা ওই স্ট্যাটাসে আরাফাত একটি দৈনিকের প্রকাশিত সংবাদের অংশবিশেষ শেয়ার করেন। যেখানে গত শুক্রবার বিকেলে চট্টগ্রামের পুরাতন রেলস্টেশন চত্বরে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে আমীর খসরুর দেওয়া বক্তব্য রয়েছে। যেখানে লেখা আছে—পদ্মা সেতুর ৩০ হাজার কোটি টাকা কোথায় জানতে চেয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘পদ্মা সেতুতে বাড়তি ৩০ হাজার কোটি টাকা খরচ দেখানো হয়েছে। ১০ হাজার কোটি টাকার সেতু ৪০ হাজার কোটি টাকা। বাকি ৩০ হাজার কোটি টাকা কোথায়? আমরা জানি কোথায় গেছে। এগুলো সব বের হবে।’
সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ এ. আরাফাত এই অংশ শেয়ার করে ওপেন চ্যালেঞ্জের স্ট্যাটাসটি লেখেন। স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো—
ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং অন্যান্য বিএনপি নেতারা, যারা পদ্মা সেতুর নির্মাণ ব্যয় নিয়ে মিথ্যাচার করছেন, তাদেরকে আমি ওপেন চ্যালেঞ্জ দিচ্ছি। তারা পারলে দেখাক—কোথায় পদ্মা সেতু প্রকল্পে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকার বেশি খরচ হয়েছে।
(১) পদ্মা সেতু প্রকল্পে, মূল সেতু নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১২,৪৯৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ, আপার ডেক এবং লোয়ার ডেক দুটো মিলেই যে মূল সেতু, সেই মূল সেতুর ব্যয় এটি।
বাকি টাকা খরচ হয়েছে—নদী শাসনে ব্যয় আট হাজার ৯৭২ কোটি টাকা, সংযোগ সড়ক ও সার্ভিস এরিয়া নির্মাণে ব্যয় এক হাজার ৫০০ কোটি টাকা, ভূমি অধিগ্রহণ, পুনর্বাসন ও পরিবেশ সংক্রান্তে ব্যয় চার হাজার ৩৪২ কোটি টাকা, পরামর্শক, সেনা নিরাপত্তা, ভ্যাট, আয়কর, যানবাহন, বেতন ও ভাতাদি এবং অন্যান্য খাতে ব্যয় দুই হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা।
‘এখানে, কোথায় লুটপাট করার উদ্দেশে অতিরিক্ত ব্যয় দেখানো হয়েছে তা প্রমাণসহ তথ্য দিন’ উল্লেখ করে মোহাম্মদ এ. আরাফাত ওই স্যাটাসে লেখেন—
(২) প্রতিটি পয়সা বাংলাদেশ সরকার নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় করেছে।
(৩) একটি পয়সাও বাইরের কোনো দেশ বা প্রতিষ্ঠান থেকে ধার করা হয়নি। সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয় এই টাকা সেতু বিভাগকে দিয়েছে।
(৪) সেতু বিভাগ টোল সংগ্রহের মাধ্যমে সেই অর্থ সংগ্রহ করে আগামী ৩৬ বছরে অর্থ মন্ত্রণালয়কে ফেরত দেবে, যা অন্যান্য জনকল্যাণমূলক প্রকল্পে ব্যবহৃত হবে।
শেষে আরাফাত লেখেন, ‘ডান-বামে গুজব না ছড়িয়ে, সৎসাহস থাকলে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করুন।’