পদ্মা সেতু পার হওয়া প্রথম নারী বাইকচালক
আজ রোববার সকাল ৬টা থেকে পদ্মা সেতু দিয়ে যান চলাচল করছে। এর আগে সেতুর দুই প্রান্তে ভিড় করতে থাকে বাস, ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন ছোটবড় যানবাহন। সকাল ৬টা বাজার সঙ্গে সঙ্গে সেতু পার হতে থাকে এসব যানবাহন।
এরই মধ্যে পদ্মা সেতু পাড়ি দেওয়া প্রথম যানবাহন এবং চালকদের ব্যাপারে জানা গেছে। এর মধ্যে রয়েছেন একজন লেডি বাইকারও। তাঁর নাম রুবায়াত রুবা। নারী বাইক চালক হিসেবে প্রথম পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়েছেন তিনি।
এ ছাড়া নির্দিষ্ট পরিমাণ টোল দিয়ে ঢাকার কামরাঙ্গীরচর থেকে আসা মোটরসাইকেল আরোহী আনোয়ার হোসেন (ঢাকা মেট্রো হ-৬০-৬০৩৯) প্রথম টোল প্লাজা পার হন। প্রথম ট্রাক—ঢাকা মেট্রো ট-১৮-৭২২২, প্রথম প্রাইভেটকার—ঢাকা মেট্রো গ-২৮-০৯৮৬ এবং প্রথম বাস—ঢাকা মেট্রো হ-১৫-৪৬২৪।
অভিজ্ঞতা জানতে চাইলে রুবায়াত রুবা নামের ওই বাইক চালক বলেন, ‘যেহেতু প্রথম, তাই খুব এক্সাইটেড ছিলাম। যদিও রাস্তায় অনেক জ্যাম ছিল, এটা স্বাভাবিক। অন্য হাইওয়েতে যেমন ভিড় থাকে, ওরকমই ছিল। বেশি সময় লাগেনি, যেহেতু বাইকের একটা আলাদা সারি আছে।’
রুবায়াত আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমি কর্তৃপক্ষকে বলব, যেন নিয়ম-কানুনগুলোর দিকে নজর দেন। উলটো দিকে গাড়ি আসা দুর্ঘটনার একটি বড় কারণ, এসব কিছু যেন না হয়। আর যতই আইন-কানুন করা হোক, আমরা জনগণ যদি সচেতন না হই, তাহলে লাভ নেই। আমাদের সবাইকেই সতর্ক হতে হবে। আমার একটা অনুরোধ থাকবে, সবাই যেন ট্রাফিক সিগন্যাল মেনে চলে।’
এদিকে, প্রথম দিন এমন একটি অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে পেরে উচ্ছ্বাস দেখা গেছে চালক ও যাত্রীদের মধ্যে। অন্যদিকে, কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে—পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তাদের যথাযথ প্রস্তুতি রয়েছে।
সেতু পার হওয়ার আগে চালকেরা স্বস্তি প্রকাশ করে বলছেন, ‘একটা বড় বিষয় যে, দালাল নেই। দালালের ঝামেলা একটা বড় ঝামেলা। এখন বড় কোনো জ্যামে বসে থাকা লাগছে না, সুন্দরমতো পার হতে পারছি।’
মোটরসাইকেলচালক এক যুবক পদ্মা সেতু পার হতে পেরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, ‘পদ্মা সেতু দিয়ে পার হতে পেরে অনেক খুশি। আমরা যে এসেছি, এটা আমাদের কাছে কোনো জার্নি মনে হয়নি, এটা একটা স্বপ্ন ছিল। এটা ভাষা দিয়ে বর্ণনা করা যাবে না। যারা আসছে, তারাই বুঝতে পারবে।’
পদ্মা সেতুর কর্মীরা বলছেন, ‘আমরা সকাল ৬টা থেকে কাজ শুরু করেছি। সেতু উন্মুক্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত অনেক যানজট ছিল। কিন্তু, আমরা সামলে নিয়েছি। এখন সব আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং সবাই অনেক খুশি। পুলিশ আমাদের সহযোগিতা করছে।’
দেশের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো পদ্মা সেতু গতকাল শনিবার উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনের পর দেশের এই সবচেয়ে বড় সেতু আজ রোববার সকাল ৬টা থেকে যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়।
অনেকেই শখের বশে পদ্মা সেতু পারাপারের জন্য এসেছেন। পাঁচটি কাউন্টারের মাধ্যমে টোল আদায় করা হচ্ছে।
সেতু বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘সকাল ৫টা ৫০ মিনিটের দিকে যানবাহন পারাপারের জন্য পদ্মা সেতুর টোল প্লাজা খুলে দেওয়া হয়।’
তোফাজ্জল হোসেন জানান, টোল প্লাজা খোলার পর প্রথম দিকে মোটরসাইকেলের চাপ ছিল বেশি। কিন্তু, পরে বাস-মিনিবাস-প্রাইভেটকার ও ট্রাকের দীর্ঘ সারি হয়ে যায়। তবে, পদ্মা সেতু পার হওয়া ও দেখার জন্য উৎসুক জনতার সংখ্যাই বেশি।