পরকীয়ার বাধা দেওয়ায় স্ত্রীকে হত্যা, স্বামীর মৃত্যুদণ্ড
খাগড়াছড়িতে পরকীয়ায় বাধা দেওয়ায় শিরিনা আক্তার শিরিনকে হত্যার দায়ে তাঁর স্বামী নিজাম উদ্দিনকে মৃত্যুদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন আদালত।
আজ রোববার খাগড়াছড়ি জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক রেজা মো. আলমগীর হাসান এ রায় দেন। এ সময় মামলার একমাত্র আসামি নিজাম উদ্দিন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
রায়ে আদালত পর্যবেক্ষণে বলেন, শিরিনা আক্তার শিরিনকে স্বামী নিজাম উদ্দিন ঠাণ্ডা মাথায় হত্যা করেছেন। তিনি এ হত্যাকাণ্ডকে ধামাচাপা দিতে নানা ছলচাতুরির আশ্রয় নেন। এই হত্যাকে আত্মহত্যা হিসেবে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন আসামি।
আদালত আসামি নিজাম উদ্দিনকে মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আদেশ দেন। রায়ের বিরুদ্ধে আসামি আপিল করতে চাইলে রায় ঘোষণার সাত কার্যদিবসের মধ্যে তা করতে পারবেন।
শিরিনা আক্তারের বাবা তাজুল ইসলাম মামলার রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেন, ‘আমার মেয়েকে মিথ্যা প্রলোভনে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ে করে নিজাম। এরপরও মেয়ের সুখের কথা ভেবে শহরের শালবাগান এলাকায় ১০ শতক জমি কিনে সেখানে বাড়ি করে দিয়েছি। পরবর্তী সময়ে মেয়েজামাইকে গাড়িও কিনে দিয়েছি। কিন্তু মেয়েটিকে বাঁচতে দিল না। আশা করছি, দ্রুত এ রায় কার্যকর হবে।’
আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বিধান কানুনগো রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেন, ‘মামলা চলাকালীন রাষ্ট্রপক্ষ মোট ১০ জনের সাক্ষ্য আদালতে উপস্থাপন করে। মাত্র এক বছরের মাথায় আদালত রায় ঘোষণা করেন।’
অপরদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. আরিফ এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে বলে জানান।
২০১৮ সালের ৩ অক্টোবর দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে পরকীয়ায় বাধা দেওয়ায় শিরিনা আক্তার শিরিনকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন নিজাম উদ্দিন। স্ত্রীকে হত্যার পর এক বছরের শিশুকন্যাকে শ্বশুরবাড়িতে রেখে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে নিজামকে আটক করে পুলিশে দেয় পরিবারের লোকজন। এ ঘটনায় পরের দিন ৪ অক্টোবর শিরিনার বাবা তাজুল ইসলাম খাগড়াছড়ি সদর থানায় মামলা করেন।