পরকীয়া করায় ছোট ভাইকে হত্যা, ভাই-ভাবি গ্রেপ্তার
নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলায় লাক মিয়া (২০) নামের এক যুবকের রহস্যজনক মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। সন্দেহভাজন হিসেবে নিহতের বড় ভাই তারা মিয়া (২৩) ও ভাবি রুমা আক্তারকে (১৯) আটকের পর বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
ভাবির সঙ্গে পরকীয়ার জেরেই প্রাণ দিতে হয়েছে লাক মিয়াকে—এমনটিই নিশ্চিত করেছেন পূর্বধলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ শিবিরুল ইসলাম।
এ দিকে পুত্রবধূর সঙ্গে পরকীয়ার জেরে খুন হয়েছে ছেলে লাক মিয়া এমন অভিযোগ এনে গতকাল শনিবার বিকেলে বড় ছেলে তারা মিয়া ও পুত্রবধূ রুমা আক্তারকে আসামি করে পূর্বধলা থানায় মামলা করেছেন নিহতের বাবা উপজেলার ঘোমকান্দা গ্রামের আবু সিদ্দিক ফকির।
এ ব্যাপারে ওসি মুহাম্মদ শিবিরুল ইসলাম জানান, বিদ্যুৎস্পৃষ্টে যুবকের মৃত্যু হয়েছে এমন খবরে গত শুক্রবার বিকেলে তিনি সঙ্গীয় ফোর্সসহ লাক মিয়ার বাড়িতে গেলে স্থানীয়রা ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ দাফন করতে চায়। কিন্তু মৃত্যুটি বিভিন্ন কারণে তাঁর কাছে রহস্যজনক মনে হওয়ায় তিনি লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠান। এ সময় সন্দেহভাজন হিসেবে নিহতের বড় ভাই ও ভাবিকে আটক করে থানায় নিয়ে এলে বেরিয়ে আসে খুনের প্রকৃত রহস্য।
এ ঘটনায় নিহতের বাবার করা অভিযোগে জানা যায়, চার-পাঁচ মাস ধরে তাঁর বড় ছেলের স্ত্রী রুমা আক্তারের সঙ্গে ছোট ছেলে লাক মিয়ার প্রেমের সম্পর্কসহ অবৈধ মেলামেশা চলে আসছিল। বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে তাঁর বড় ছেলে তারা মিয়া ও পুত্রবধূ রুমা আক্তার ছোট ছেলে লাক মিয়াকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। দুই দিন আগে তিনি ও তাঁর স্ত্রী আছমা খাতুন ঢাকায় তাঁর মেয়ের বাড়িতে বেড়াতে যান। এ সুযোগে তাঁর বড় ছেলে তারা মিয়া ও পুত্রবধূ রুমা আক্তার ছোট ছেলে লাক মিয়াকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করেন।
হত্যার পরে তাঁকে মুঠোফোনে জানান, লাক মিয়া বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছে। তিনি ঢাকা থেকে বাড়িতে এসে নিহত ছেলের থুতনিতে ও বুকে দাগ দেখতে পান।
আবু সিদ্দিক ফকিরের ধারণা, তাঁর ছেলে লাক মিয়াকে গত শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে সাড়ে ১০টার মধ্যে বড় ছেলে তারা মিয়া ও পুত্রবধূ রুমা আক্তার অজ্ঞাতপরিচয় তিন-চারজনকে নিয়ে পূর্বপরিকল্পিতভাবে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।
পূর্বধলা থানার ওসি মুহাম্মদ শিবিরুল ইসলাম হত্যা মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মামলা দায়েরের পরপরই সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আসামিদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।