বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে সংঘর্ষ, আহত ৭
আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে সাত শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
গতকাল মঙ্গলবার দিনগত মধ্যরাতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এ ঘটনায় আহতদের বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, সেখানে ছাত্রলীগের প্রধান দুটি পক্ষ রয়েছে। এর মধ্যে একটি পক্ষের নেতৃত্বে অমিত হাসান রক্তিম ও ময়িদুর রহমান বাকি এবং অপর পক্ষের নেতৃত্বে আহমেদ মহিউদ্দিন আহম্মেদ সিফাত ও সৈয়দ রুম্মান ইসলাম প্রমুখ। উভয় পক্ষই দীর্ঘদিন ধরে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের নামে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার বিকেলে বরিশাল নগরীর সিঅ্যান্ডবি রোডের কলেজ এভিনিউ তিন মাথা এলাকায় তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্সের ছাত্র রাইদুল ইসলাম নিরবকে মারধর করেন স্থানীয় যুবকেরা। এর প্রতিবাদে সেখানে সড়ক অবরোধও করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে হামলাকারীদের দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তারের আশ্বাসে ঘণ্টাখানেকের মধ্যে সড়ক অবরোধ তুলে নেয় শিক্ষার্থীরা।
যদিও এর আগেই শিক্ষার্থীর ওপর হামলার ঘটনা নিয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের দুটি গ্রুপ দুই ভাগে বিভক্ত হয়। একপর্যায়ে মধ্যরাতে হঠাৎ করেই ছাত্রলীগের পৃথক দুই গ্রুপের মধ্যে প্রকাশ্য উত্তেজনা ছড়িয়ে পরে। এসময় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলে গোটা ক্যাম্পাসে আতঙ্ক ছড়িয়ে পরে। আর, এ ঘটনায় উভয় পক্ষের সাতজন গুরুতর আহত হন।
ছাত্রলীগের একাংশের নেতা ময়িদুর রহমান বাকিসহ তার অনুসারী ছাব্বির হোসেন এবং অপরাংশের মহিউদ্দিন আহম্মেদ সিফাত ও সৈয়দ রুম্মান ইসলামসহ তাদের অনুসারী তমাল, মেহেদি হাসান ও আল সামাদ শান্ত নামে মোট পাঁচ জন আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
অমিত হাসান রক্তিম বলেন, ‘সিফাত গ্রুপের হামলায় আহত হয়ে তাদের সহপাঠী মহিদুর রহমান বাকি ও ছাব্বির হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।’
সৈয়দ রুম্মান ইসলাম দাবি করেছেন, ‘তাদের পক্ষের কমপক্ষে ছয় জন আহত হয়েছেন এবং তিনিসহ আহতরা হাসপাতালে বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।’ তবে, তাদের ওপর হামলা ও পাল্টা হামলার কারণ সম্পর্কে তিনি বিস্তারিত জানাতে রাজি হননি।
এই বিষয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো. খোরশেদ আলম বলেন, ‘মধ্যরাতে ক্যাম্পাসে হঠাৎ করেই দুদল ছাত্রের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে ছয়জনের মতো আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। রাতেই খবর পেয়ে আমরা বিষয়টি ক্যাম্পাসের পরিবেশ শান্ত রাখার পাশাপাশি বিষয়টি খতিয়ে দেখতে শুরু করেছি। তবে, বর্তমানে ক্যাম্পাসের পরিবেশ শান্ত রয়েছে।’
আজ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সবাই বিষয়টি নিয়ে বসবেন বলেও জানান প্রক্টর ড. মো. খোরশেদ আলম।
এদিকে, রাতের এ ঘটনায় থানা পুলিশের কর্মকর্তারা ক্যাম্পাসে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার পাশাপাশি হাসপাতালে গিয়েছেন বলে জানিয়েছেন কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই মেহেদি হাসান।