বর্ষবরণে বোমা হামলা : ২১ বছর ধরে চলছে বিস্ফোরক মামলার বিচার
রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলার ঘটনায় বিস্ফোরক আইনের মামলার রায় ২১ বছরেও হয়নি। মামলাটি ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক আবু জাফর মোহাম্মদ কামরুজ্জামানের আদালতে এখন যুক্তিতর্ক পর্যায়ে রয়েছে।
সর্বশেষ চলতি মাসের ১০ তারিখ যুক্তিতর্ক শুনানির দিন ছিল। তবে, আসামিপক্ষের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তা পিছিয়ে ২০ এপ্রিল নির্ধারণ করা হয়।
আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আবু আব্দুল্লাহ মিঞা এ তথ্য এনটিভি অনলাইনকে বলেন, বিস্ফোরক মামলায় ৮৪ জনের মধ্যে এ পর্যন্ত ৫৪ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।
এ ছাড়া গত ১০ এপ্রিল আসামিপক্ষের আইনজীবীরা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক আবু হেনা মো. ইউসুফকে আবারও জেরা করার আবেদন করেছিলেন। আদালত তা নামঞ্জুর করায় উচ্চআদালতে যেতে আদালতের কাছে সময় প্রার্থনা করে আসামিপক্ষ। পরে আদালত আবেদন মঞ্জুর করে যুক্তি উপস্থাপনের জন্য ২০ এপ্রিল দিন ধার্য করেন।
পিপি আবু আব্দুল্লাহ মিঞা বলেন, ‘এ মামলায় যুক্তিতর্ক শুনানি শেষ হলেই রায়ের দিকে যাবে।’
আসামিপক্ষের আইনজীবী ফারুক আহম্মেদ বলেন, ‘এ মামলার যুক্তি উপস্থাপনের দিন ২০ এপ্রিল রয়েছে। সেদিন বিচারিক কার্যক্রম দ্রুত শেষ হবে বলে আশা করছি।’
রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলার ঘটনায় করা হত্যা মামলায় ২০১৪ সালের ২৩ জুন মুফতি হান্নানসহ আট জনের মৃত্যুদণ্ড ও অপর ছয় জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন—মাওলানা তাজউদ্দিন (পলাতক), মাওলানা আকবর হোসাইন, মুফতি আব্দুল হাই (পলাতক), হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর (পলাতক), মাওলানা আবু বকর, মুফতি শফিকুর রহমান (পলাতক) ও আরিফ হাসান সুমন। দণ্ডপ্রাপ্ত এ আট আসামিকে মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আদেশ দেন আদালত।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন হাফেজ মাওলানা আবু তাহের, মাওলানা সাব্বির, হাফেজ ইয়াহিয়া, মাওলানা শওকত ওসমান ওরফে শেখ ফরিদ, মাওলানা আব্দুর রউফ ও মাওলানা শাহাদাৎ উল্লাহ জুয়েল।
বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে করা মামলার আসামিরা হলেন—মুফতি আবদুল হান্নান মুন্সী ওরফে আবুল কালাম ওরফে আবদুল মান্নান, আরিফ হাসান সুমন, মাওলানা আকবর হোসাইন ওরফে হেলালউদ্দিন, মো. তাজউদ্দিন, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, মাওলানা আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আবদুল হাই, শাহাদত উল্লাহ ওরফে জুয়েল, হাফেজ আবু তাহের, মাওলানা আবদুর রউফ, মাওলানা সাব্বির ওরফে আবদুল হান্নান সাব্বির, মাওলানা শওকত ওসমান ওরফে শেখ ফরিদ ও হাফেজ ইয়াহিয়া।
২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান চলাকালে বোমা হামলায় ১০ জন নিহত হন। পরে ২০০৮ সালের ২৯ নভেম্বর হরকাতুল জিহাদ (হুজি) নেতা মুফতি আবদুল হান্নানসহ ১৪ জনকে অভিযুক্ত করে ঢাকার সিএমএম আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে সিআইডি।