বহুগুণের অধিকারী ছিলেন সাংবাদিক লতিফ সিদ্দিকী
বহুগুণের অধিকারী লতিফ সিদ্দিকী ছিলেন একাধারে সাংবাদিক, রাজনীতিক, নাট্যকার, কবি, গল্পকার ও শিশু সংগঠক। প্রগতিশীল চিন্তাধারার এই মানুষটি আজীবন নির্যাতিত ও নিপীড়িত মানুষের কল্যাণে কাজ করে গেছেন। তিনি ছিলেন একজন আপাদমস্তক আদর্শিক মানুষ। শত অভাব, প্রতিবন্ধকতায়ও তিনি নীতি ও আদর্শ থেকে একটুও বিচ্যুত হননি।
আজ শুক্রবার (১০ ফেব্রয়ারি) বিকেলে মানিকগঞ্জ শহরের উদীচী সংসদ মিলনায়তনে আয়োজিত লতিফ সিদ্দিকীর স্মরণসভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
লতিফ সিদ্দিকী স্মৃতি পরিষদের উদ্যোগে তাঁর স্মরণসভার আয়োজন করা হয়। এতে প্রগতিশীল রাজনীতিক, শিক্ষক, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক সংগঠকসহ তাঁর সহপাঠী, সহকর্মী ও রাজনৈতিক সহযোগীরা অংশ নেন।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) জেলা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক আবুল ইসলাম শিকদারের সভাপতিত্বে এবং লতিফ সিদ্দিকী স্মৃতি পরিষদের আহ্বায়ক ইকবাল হোসেন কচির সঞ্চালনায় স্মরণসভায় বক্তব্য দেন মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি গোলাম ছারোয়ার ছানু, লতিফ সিদ্দিকীর সহপাঠী সহকারী অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদ নান্নু, রাজনৈতিক সহচর শিক্ষক মজিবুর রহমান, স্মৃতি পরিষদের সদস্য সচিব বিমল রায়, সমাজকর্মী সুধীর চন্দ্র দে, জেলা উদীচী সংসদের সাবেক সভাপতি গাজী ওয়াজেদ আলম, লতিফ সিদ্দিকীর ভাই সাংবাদিক নূর সিদ্দিকী, প্রথম আলোর মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি আব্দুল মোমিনসহ অনেকেই।
লতিফ সিদ্দিকীর সহপাঠী সহকারী অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদ নান্নু বলেন, লতিফ সিদ্দিকী ছিলেন বহু প্রতিভার অধিকারী। বহু প্রতিকূলতার মধ্যেও তিনি নীতি ও আদর্শ থেকে সরে যাননি। যা বিরল বলে তিনি মন্তব্য করেন।
মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি গোলাম ছারোয়ার ছানু বলেন, লতিফ সিদ্দিকী নিজে নাটক লেখার পাশাপাশি অভিনয়ও করেছেন। সে সময় দর্শকরা তা বেশ উপভোগ করতেন।
অধ্যাপক আবুল ইসলাম শিকদার বলেন, প্রায় সব মানুষই একটি ফ্রেমে বন্দি থাকেন। তবে লতিফ সিদ্দিকী ছিলেন ব্যতিক্রম। জীবদ্দশায় তিনি বহুবিদ কাজ করে গেছেন।
লতিফ সিদ্দিকীর রাজনৈতিক সহচর শিক্ষক মজিবুর রহমান বলেন, তিনি ছিলেন প্রগতিশীল চিন্তাধারার মানুষ। তিনি আজীবন নির্যাতিত ও নিপীড়িত মানুষের জন্য কাজ করে গেছেন।
সাংবাদিক লতিফ সিদ্দিকী প্রথম আলোর বিশাল বাংলার বিভাগীয় প্রধান (মফস্বল সম্পাদক) ছিলেন। তিনি ভোরের কাগজ ও দৈনিক সংবাদে কাজ করেছেন। রোদ্দুর নামে একটি সাহিত্য পত্রিকা সম্পাদনা করতেন তিনি। ‘জনৈক হরিদাস পালের নিজের কথা’ তাঁর পাঠকসমাদৃত উপন্যাস। তিনি দৈনিক সংবাদ পত্রিকায় ‘উলুখড়ের দিনলিপি’ শিরোনামে নিয়মিত কলাম লিখতেন। বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর সমিতি ও বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সক্রিয় নেতা ছিলেন তিনি। খেলাঘর সংগঠনেরও সংগঠক ছিলেন তিনি। মস্তিষ্কের ক্যানসারে ১৯৯৯ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি তিনি মৃত্যুবরণ করেন।