বিয়ের দিন কিশোরীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা : আসামি গ্রেপ্তার
রংপুরে বিয়ের দিন কিশোরী তারমিনা আক্তার ফুলতিকে (১৪) ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনায় কথিত প্রেমিক শাখাওয়াত হোসেনকে গাজীপুরের কালিয়াকৈর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ সোমবার দুপুরে পুলিশের যৌথ দল তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে তাঁকে গ্রেপ্তার করে।
বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুর রহমান গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ঘটনার পর থেকে আসামিকে ধরতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হয়। অবশেষে আজ সোমবার পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সমন্বয়ে বদরগঞ্জ থানা পুলিশের যৌথ অভিযানে গাজীপুরের কালিয়াকৈর এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে নিয়ে পুলিশ রংপুরের পথে রওয়ান দিয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২৮ জুলাই ঘটনাটি ঘটে রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার লোহানীপাড়া ইউনিয়নের সাজানো গ্রামে। প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় মিঠাপুকুর উপজেলার বড়বালা ইউনিয়নের পশ্চিম বড়বালা এলাকার শাখাওয়াত হোসেন বিয়ের দিন ভোরে ঘুম থেকে ডেকে তুলে ছুরিকাঘাত করে তারমিনা আক্তারকে মারাত্মক আহত করে পালিয়ে যান। এরপর তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে পাঁচদিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে গতকাল রোববার ভোর সোয়া ৬টার দিকে ফুলতি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। ওই দিন ময়নাতদন্ত শেষে তারমিনার মরদেহ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
নিহত তারমিনা লোহানীপাড়া দাখিল মাদরাসার নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। সে তোয়াব আলী ও পারভিন আক্তার দম্পত্তির সন্তান ছিল। তারমিনাকে ছুরিকাঘাতের পরের দিন ২৯ জুলাই ঘাতক শাখাওয়াত হোসেনের বিরুদ্ধে তারমিনার মামা নূর আলম বদরগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেছিলেন। পরে ওই মামলা হত্যা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়। এরপর থেকে বাড়ি থেকে পালিয়ে যান শাখাওয়াত হোসেন।
পার্শ্ববর্তী মিঠাপুকুর উপজেলার বড়বালা এলাকার পশ্চিম বড়বালায় তারমিনা আক্তারের বড় বোন তহমিনার বিয়ে হয়। তহমিনার আত্মীয়তার সম্পর্কে একই এলাকার শাখাওয়াত হোসেন প্রেমের প্রস্তাব দেন তারমিনাকে। বিয়ের বয়স না হলেও পারিবারিকভাবে তড়িঘড়ি করে গত বুধবার তারমিনার বিয়ের দিন ধার্য করা হয়। এ ঘটনা জানতে পেয়ে শাখাওয়াত হোসেন ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন তারমিনার পরিবারের ওপর। এক পর্যায়ে মোটরসাইকেলে তারমিনার বাড়িতে আসেন শাখাওয়াত। বাড়ির সবাই যখন ঘুমিয়ে ছিল এ অবস্থায় ঘুমন্ত তারমিনাকে ডেকে দরজার কাছে আনেন। এরপর ছুরি দিয়ে কুপিয়ে জখম করেন। চিৎকার দিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে বাড়ির লোকজন ছুটে এসে তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে চেতনা হারিয়ে ফেলেন তারমিনা। আশপাশের লোকজন ছুটে এসে শাখাওয়াত হোসেনকে ধাওয়া দিলে তিনি মোটরসাইকেল নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। পরে তারমিনাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে ভর্তি করা হয়। গত পাঁচদিন ধরে চিকিৎসাধীন থাকার পর গতকাল রোববার মারা যান তারমিনা।