বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশীদকে বাঁচাতে পরিবারের আকুতি
অর্থাভাবে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর প্রহর গুনছে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান পাবনার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশীদ। তিনি বর্তমানে উত্তরার লুবনা হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ইতোমধ্যে তার প্রাপ্ত পেনসন আনুতোষিকের সমুদয় টাকা চিকিৎসায় ব্যয়ে শেষ হয়ে গেছে। অবশেষে কোনো উপায়ন্তর না পেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে এবং সমাজের বিত্তবানদের কাছে সাহায্যের আবেদন করেছেন।
পাবনা সদর আসনের সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক প্রিন্স এই অসহায় মুক্তিযোদ্ধার চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে ডিও লেটার পাঠিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭১ সালে আব্দুর রশীদ এইচএসসি ছাত্র অবস্থায় বঙ্গবন্ধুর ডাকে দেশ মাতৃকার টানে পরাধীনতা শেকল থেকে মুক্ত হতে দেশ স্বাধীন করার দুর্দম নেশা ও স্বপ্ন নিয়ে পাড়ি জমান পাশ্ববর্তী দেশ ভারতে। তিনি ভারতের শিলিগুড়ি ক্যাম্পে সন্মুখযোদ্ধা হিসেবে প্রশিক্ষণ নিয়ে স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। এ খবর পেয়ে রাজাকারদের সহযোগিতায় পাকবাহিনী তার পাকশীর গ্রামের বাড়ি জ্বালিয়ে দেয়। দেশ স্বাধীন হলে রশীদ দেশে ফিরে এসে এইচএসসি পাশ করে ভর্তি হন রাজশাহী প্রকৌশল কলেজে। গ্রামের কৃষক পরিবারের এই মেধাবী ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। সততার সঙ্গে চাকরি থেকে অবসর নেন ২০১২ সালের জুন মাসে। এরপরই হার্টের সমস্যার কারণে ২০১৩ সালে ওপেন হার্ট সার্জারি করতে হয়। তিনি ১৯৯৬ সাল থেকে উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়বেটিস রোগে ভুগছিলেন। হার্ট সার্জারির পর শুরু হয় কিডনি সমস্যা।
চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে কিডনি সমস্যা জটিল আকার ধারণ করলে তাকে সপ্তাহে তিনদিন ডায়ালসিস করাতে হচ্ছে। প্রতিটি ডায়ালিসিস করতে পাঁচ হাজার টাকা খরচ হয়। মাসে ১২টি ডায়ালসিস করতেই খরচ হয়ে যায় ৬০ হাজার টাকা। বর্তমানে মাসে তার চিকিৎসা ব্যয় দাঁড়িয়েছে কমপক্ষে এক লাখ টাকায়।
ইতোমধ্যে চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে তার পেনসনের সমুদয় টাকা, স্থাবর, অস্থাবর সম্পদ বিক্রি করে নিঃস্ব হয়ে গেছে পরিবার। এখন বিক্রির জন্য অবশিষ্ট কিছু না থাকায় তিনি তার চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রীসহ সমাজের দানশীল ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে আকুল আবেদন জানিয়েছেন।
পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার লক্ষীকুণ্ডা ইউনিয়নের সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা মরহুম ইয়াদ আলী মৃধার মা গৃহবধূ কোমেলা খাতুনের জৈষ্ঠ ছেলে আ. রশীদ।
যে মানুষ যুদ্ধ করে দেশকে এনে দিয়েছেন জয়ের আলোকবর্তিকা। তিনি কি নিঃশেষ হয়ে যাবেন স্বপ্নের স্বাধীন দেশে বিনা চিকিৎসায়?
বীর মুক্তিযোদ্ধা আ. রশীদের মুক্তিযোদ্ধা গেজেট নম্বর-৮৭৮, লাল মুক্তিবার্তা নম্বর-৩১১০২০৩৪৯, বামুস নম্বর -৯৯০১, প্রধানমন্ত্রী স্বাক্ষরিত সনদ নম্বর-১০২৮৪, সমন্বিত মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় মুক্তিযোদ্ধা নম্বর ০১৭৬০০০২৩০৩।
আব্দুল রশীদ সাত নম্বর সেক্টরের যোদ্ধা ছিলেন। জাতির এই শ্রেষ্ঠ সন্তানের পাশে দাঁড়াতে চাইলে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে তাঁর পরিবারের সদস্যরা। সহযোগিতা পাঠানোর জন্য একাউন্ট নম্বর ০০০০০৩৪০৬২৫১৫, জনতা ব্যাংক, গ্রিন রোড শাখা (পশ্চিম), তেজগাঁও, ঢাকা।