ভাগনির বিয়েতে গাভি কেনা নিয়ে রসিকতায় প্রতিপক্ষের মারধরে মামার মৃত্যু
নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলায় ভাগনির বিয়েতে গাভী কেনা নিয়ে রসিকতার জেরে তর্কে জড়িয়ে প্রতিপক্ষের মারধরে আবু কালাম (৫০) নামের এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাতে উপজেলার অলিপুরা উত্তরপাড়া এলাকায় হায়দার আলীর মুদি দোকানের সামনে এ ঘটনা ঘটে। নিহত আবুল কালাম একই এলাকার মৃত নুর চাঁন মিয়ার ছেলে।
পারিবারিক ও স্থানীয় সূত্র জানায়, আগামী সোমবার আবু কালামের এক ভাগনির বিয়ে। ওই বিয়েতে কনে ও বরপক্ষের মেহমানদের খাওয়ানোর জন্য একটি গাভী কেনেন তার ভগ্নিপতি। গতকাল রাতে এশার নামাজ শেষে বাড়ির পাশে হায়দার আলীর দোকানে চা খেতে যান কালাম। ওই সময় সেখানে ছিলেন একই এলাকার মৃত সোলেমান মিয়ার ছেলে জয়ধর আলীসহ আরও তিন থেকে চারজন। এ সময় সবার সামনেই বিয়ের জন্য আনা ওই গাভী নিয়ে রসিকতা করতে থাকেন জয়ধর। গাভীর কথা জানাজানি হলে ভগ্নিপতির সম্মান নষ্ট হবে ভেবে জয়ধরকে এ ধরনের সমালোচনা করতে বারণ করেন কালাম। এতে ক্ষিপ্ত হন জয়ধর। এ নিয়ে দুজনের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে কালামের কানে সজোরে থাপ্পড় মারেন জয়ধর। সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন কালাম। এরপরও কিলঘুষি ও লাথি মারতে থাকেন জয়ধরের ভাই ইমান আলীসহ চার থেকে পাঁচজন।
খবর পেয়ে স্বজনরা তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় এক পল্লী চিকিৎসকের কাছে নেওয়ার পথে মৃত্যু হয় তাঁর। এ ঘটনার পর ঘরে তালা দিয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন অভিযুক্ত জয়ধর আলীসহ তাঁর পরিবার ও জড়িত ব্যক্তিরা।
নিহতের মেয়ে রুনা আক্তার বলেন, ‘বিয়েতে আসা মেহমানরা জানতে পারলে ওই গাভীর মাংস নাও খেতে পারেন। তাই এই নিয়ে লোকজনের সামনে সমালোচনা না করতে জয়ধরকে বারণ করেছিলেন বাবা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বাবার কানে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে থাপ্পড়, কিল-ঘুষি ও লাথি দিয়ে মাটিতে ফেলে দেন তাঁরা। ওই সময় তিনি শ্বাস নিতে পারছিলেন না। পরে স্থানীয় এক পল্লীচিকিৎসকের কাছে নেওয়ার পথে মৃত্যু হয় বাবার। এ ঘটনায় জড়িতদের কঠোর শাস্তি চাই।'
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী দুজন ব্যক্তি জানান, ‘কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে জয়ধর ও তার লোকজন ঘিরে ফেলেন কালামকে। তার কানে থাপ্পড় এবং শরীরে কিল-ঘুষি ও লাথি মারেন তারা। এতে তিনি মাটিতে পড়ে গড়াগড়ি দিচ্ছিলেন।’
সহকারী পুলিশ সুপার (রায়পুরা সার্কেল) সত্যজিৎ কুমার ঘোষ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘বিয়ের অনুষ্ঠানে মেহমানদের খাওয়ানোর জন্য আনা গরু নিয়ে একটি দোকানে দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে প্রতিপক্ষের মারধরে কালাম নামের ওই ব্যক্তি মারা যান। জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনা হবে। তবে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে এখনও লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি।’