ভীতসন্ত্রস্ত হওয়ার কিছু নেই : টিকা নিয়ে বললেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
নভেল করোনাভাইরাসের টিকা নিয়ে ভীতসন্ত্রস্ত হওয়ার কিছু নেই বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স অডিটোরিয়ামে আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে করোনার টিকা নিয়ে এ কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
এরপর পর্যায়ক্রমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন ও পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ করোনার টিকা নেন। পরে তাঁদের তিনজনকেই ৩০ মিনিটের অবজারভেশনে রাখা হয়। তবে, এ সময় তাঁদের কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, ‘করোনা প্রতিকূলতা থেকে আজ আমরা এমন একটা জায়গায় এসেছি যে, আমাদের দেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণের রেট কমে গেছে। এগুলো সব সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শিতা ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্তের কারণেই। এখন কোভিড নিয়ন্ত্রণের তালিকায় ১৭তম স্থানে বাংলাদেশ।’
আসাদুজ্জামান খান কামাল আরো বলেন, ‘যখন দেশে প্রথম করোনার সংক্রমণ শুরু হয়, তখন আমরা কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে গিয়েছিলাম। তখন আমরা জানতাম না যে, কীভাবে এটা নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। তখন পুলিশের মধ্যে একটা আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছিল। সে সময় পুলিশ সদস্যরা একের পর এক আক্রান্ত হতে থাকেন। এরপর পুলিশ হাসপাতালের সেবার মান করোনা নিয়ন্ত্রণের জন্য এমন একটি জায়গায় এলো, সবাই বলা শুরু করল যে, সিএসই ও পুলিশ হাসপাতাল একই সমান্তরাল লাইনে চলছিল। কে প্রথম আর কে দ্বিতীয়, তা বলা যায়নি।
মন্ত্রী বলেন, ‘পুলিশ সদস্যরা ফ্রন্টলাইনার হিসেবে কাজ করেছে। তারা সংক্রমণ নিয়ে আতঙ্কিত হয়নি। পুলিশ নিজেরা আক্রান্ত হলেও দাফনের এগিয়ে এসেছে।’
বর্তমান পুলিশপ্রধান বেনজীর আহমেদের সঠিক সিদ্ধান্তের কারণে পুলিশ সদস্যদের মধ্যে করোনার সংক্রমণ রোধ করা সম্ভব হয়েছে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘পুলিশ হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও পুলিশ সদস্যদের তদারকির মাধ্যমে এই রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতাল আজ অত্যাধুনিক একটি হাসপাতালে পরিণত হয়েছে এবং এই সেবা যাঁরা নিয়েছেন, তাঁরা সবাই মনে রাখবেন। করোনার টিকা দেওয়ার কার্যক্রমেও পুলিশ হাসপাতাল পিছিয়ে নেই।’
মন্ত্রী আরো বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন, কেউ যেন করোনার টিকা নেওয়া থেকে বাদ না পড়ে। পুলিশ বাহিনীর সব সদস্যই যেন টিকা নেন। শুধু রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালই নয়, দেশের সব পুলিশ হাসপাতাল ছাড়াও অন্যান্য হাসপাতালে তাঁরা (পুলিশ সদস্যরা) টিকা নিচ্ছেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘করোনার টিকা বাংলাদেশে আসবে কি আসবে না, অনেকেই বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়িয়েছিল। বিভ্রান্তি ছড়িয়ে কোনো লাভ হয়নি। সময়মতো বাংলাদেশে টিকা এসেছে এবং তা জনগণকে দেওয়া হচ্ছে। অনেক দেশ এখন পর্যন্ত করোনা প্রতিরোধী টিকা পায়নি। সারা দেশে করোনা প্রতিরোধী টিকা দেওয়ার কাজ চলছে। টিকা নিয়ে ভীতসন্ত্রস্ত হওয়ার কিছু নেই। নির্ভয়ে সবাই টিকা নিতে পারেন। টিকা নিয়ে দেশকে করোনামুক্ত করুন।’
রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে করোনা প্রতিরোধী টিকা দেওয়ার জন্য ১৮টি বুথ স্থাপন করা হয়েছে। এতে প্রতিদিন তিন হাজার মানুষকে টিকা দেওয়া হচ্ছে। পুলিশ সদস্য ছাড়াও সাধারণ জনগণও রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে এখানে এসে টিকা নিতে পারছেন।