ভোর থেকে স্বপ্নের পদ্মা সেতুতে চালু গণপরিবহণ
দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ গাড়িতে করে পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়ে রাজধানীতে প্রবেশ করবে। এটা এক সময় ছিল শুধু স্বপ্ন। সেই স্বপ্ন এখন সত্যি হয়েছে। আজ শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে খুলে গেছে দক্ষিণ দুয়ার। সেতুর দ্বার আজ উদঘাটন হলেও রোববার ভোর ৬টা থেকে সাধারণ মানুষের জন্যে চলাচল উন্মুক্ত করা হবে।
তবে ঐতিহাসিক এই সেতু দিয়ে চলতে গেলে মানতে হবে কিছু নিয়ম। সেতুর ওপর গতি রাখতে হবে ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটারের মধ্যে, যাবে না দাঁড়ানো।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ এক গণবিজ্ঞপ্তিতে জানায়, পদ্মা সেতুতে ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটারের বেশি গতিতে গাড়ি চালানো যাবে না। এ সেতুর ওপর যে কোনো ধরনের যানবাহন দাঁড়ানো ও যানবাহন থেকে নেমে সেতুর ওপর দাঁড়িয়ে ছবি তোলা বা হাঁটা সম্পূর্ণ নিষেধ।
এ ছাড়া তিন চাকার যানবাহন (রিকশা, ভ্যান, সিএনজি, অটোরিকশা ইত্যাদি), পায়ে হেঁটে, সাইকেল বা নন-মটোরাইজড গাড়িতে সেতু পারাপার হওয়া যাবে না। গাড়ির বডির চেয়ে বেশি চওড়া এবং ৫ দশমিক ৭ মিটার উচ্চতার চেয়ে বেশি উচ্চতার মালামালসহ যানবাহন সেতুর ওপর দিয়ে পারাপার করা যাবে না। সেতুর ওপরে কোনো ধরনের ময়লা ফেলা যাবে না।
কোন পরিবহণের কত টোল
পদ্মা সেতু পারাপারে মোটরসাইকেলে ১০০ টাকা, কার ও জিপে ৭৫০ টাকা, পিকআপে এক হাজার ২০০ টাকা, মাইক্রোবাসে এক হাজার ৩০০ টাকা টোল পরিশোধ করতে হবে।
বাসের ক্ষেত্রে ছোট বাস (৩১ আসন) এক হাজার ৪০০ টাকা, মাঝারি বাস (৩২ আসন বা এর বেশি) দুই হাজার টাকা, বড় বাস (থ্রি-এক্সেল) দুই হাজার ৪০০ টাকা টোল দিতে হবে। এ ছাড়া ছোট ট্রাককে (পাঁচ টন পর্যন্ত) এক হাজার ৬০০ টাকা, মাঝারি ট্রাকে (পাঁচ টনের বেশি ও সর্বোচ্চ আট টন পর্যন্ত) দুই হাজার ১০০ টাকা, মাঝারি ট্রাক (৮ টনের বেশি ও সর্বোচ্চ ১১ টন) দুই হাজার ৮০০ টাকা, ট্রাকে (থ্রি-এক্সেল পর্যন্ত) পাঁচ হাজার ৫০০ টাকা, ট্রেইলার (ফোর-এক্সেল পর্যন্ত) ছয় হাজার টাকা। আর ট্রেইলার (ফোর-এক্সেলের অধিক) ছয় হাজারের সঙ্গে প্রতি এক্সেলের জন্য এক হাজার ৫০০ টাকা যুক্ত হবে।
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে কোন জেলায় কত ভাড়া
ঢাকার সায়েদাবাদ টার্মিনাল পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে ১২টি রুটে যাত্রীদের জন্য ভাড়া ঠিক করে দিয়েছে সড়ক পরিবহণ কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের টোল কার্যকরে প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়ায় বিআরটিএ ওই টোল বাদ দিয়ে ভাড়া নির্ধারণ করেছে। যদিও শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাসের জন্য এই ভাড়ার তালিকা কার্যকর হবে না।
সায়েদাবাদ থেকে মাওয়া হয়ে খুলনায় যেতে ভাড়া ধরা হয়েছে ৫৩৭ টাকা। সায়েদাবাদ থেকে ৭৩ কিলোমিটার দূরত্বের জন্য শরীয়তপুর রুটে ভাড়া দিতে হবে ২২৬ টাকা।
ঢাকা-মাদারীপুর ৩১৩ টাকা, ঢাকা-পিরোজপুর ৫৩২ টাকা, ঢাকা-পটুয়াখালী ৫১৯ টাকা, ঢাকা-সাতক্ষীরা ৬৫৪ টাকা, ঢাকা-ফরিদপুর ২৯২, ঢাকা থেকে বাবুবাজার সেতু হয়ে শরীয়তপুর ২২৬ টাকা এবং ঢাকা-কুয়াকাটা রুটে ৭০১ টাকা ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে।
ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে মাওয়া, ভাঙ্গা, মাদারীপুর হয়ে বরিশালে যেতে ভাড়া দিতে হবে ৪২১ টাকা। সায়েদাবাদ থেকে মাওয়া রুটে ভাড়া ধরা হয়েছে ৩৯২ টাকা। এ ছাড়া কক্সবাজার-বরিশাল এক হাজার ৩৪৯ টাকা, চট্টগ্রাম-খুলনা এক হাজার ১৪৯ টাকা, চট্টগ্রাম-পটুয়াখালী-বরগুনা এক হাজার ২২৩ টাকা।