মরিশাসে বঙ্গবন্ধুর নামে সড়ক
দ্বীপ দেশ মরিশাসের রাজধানী পোর্ট লুইসে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সম্মানে একটি সড়কের নাম দেওয়া হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্ট্রিট’-এর উদ্বোধন ও ফলক উন্মোচন করা হয়।
অনলাইন প্লাটফর্মে মরিশাস সরকারের উপ-প্রধানমন্ত্রী, স্থানীয় সরকার ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হসনু এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন যৌথভাবে আজ বৃহস্পতিবার পোর্ট লুইসে এই সড়কের উদ্বোধন করেন। মরিশাসে বাংলাদেশ দূতাবাস ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সার্বিক তত্বাবধানে অনুষ্ঠানটি আয়োজিত হয়।
এ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর ভিডিও বার্তায় বলেন, বঙ্গবন্ধুর নামে পোর্ট লুইসে এই রাস্তার নামকরণ মরিশাস এবং বাংলাদেশের মধ্যে বহুমাত্রিক সম্পর্কের নিদর্শন তৈরি করেছে। তিনি মরিশাসের স্থানীয় ভাষায় বলেন, ‘লামে দা লামে’ (হাতে হাত রেখে) সম্পর্কের নতুন দিগন্তে এগিয়ে যাওয়ার জন্য আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
মরিশাস সরকারের উপপ্রধানমন্ত্রী ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হসনু তাঁর বক্তব্যে উল্লেখ করেন, রাস্তার নামকরণের মাধ্যমে বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পেরে মরিশাস সরকার ও জনগণ গর্বিত। এ প্রসঙ্গে তিনি মরিশাসের ধারাবাহিক উন্নয়নে প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মীদের দৃষ্টান্তমূলক অবদানের কথাও স্মরণ করেন।
বছরব্যাপী বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর আয়োজনে মরিশাস সরকার অংশগ্রহণ করায় মরিশাস সরকার ও জনগণের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার স্বপ্ন পূরণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বের কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্যকন্যা প্রধানমন্ত্রী ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশের কাতারে সামিল হওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছেন এবং তাঁর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে আমরা সে দিকেই এগিয়ে যাচ্ছি। এ ছাড়াও, মরিশাস-প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মীদের কর্মসংস্থানসহ বিভিন্ন দ্বি-পাক্ষিক বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় ও মজবুত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ইমরান আহমদ বঙ্গবন্ধুর নামে রাস্তার নামকরণের জন্য মরিশাস সরকারকে ধন্যবাদ দিয়ে বলেন যে, এই রাস্তার মাধ্যমে দুই দেশের সম্পর্কের মধ্যে নতুন দিগন্তের সূচনা হলো। প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মীদের অবদানের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ এবং মরিশাস উভয় দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বাংলাদেশি কর্মীগণ নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। তিনি বিশেষভাবে কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশি কর্মীদের প্রতি প্রয়োজনীয় সহযোগিতা অব্যাহত রাখায় মরিশাস সরকারকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্ট্রিটের’ বাস্তবায়ন এবং উদ্বোধনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, মরিশাস এবং বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরো এক ধাপ এগিয়ে গেল।
মরিশাসে বাংলাদেশের হাইকমিশনার রেজিনা আহমেদ তাঁর স্বাগত বক্তব্যে বলেন, মরিশাস সরকার বাঙালি জাতির মুক্তির নায়ক, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি প্রতি যে অভূতপূর্ব সম্মান প্রদর্শন করেছে, তা দুই দেশের বন্ধনকে চিরস্থায়ী করবে।
পোর্ট লুইসে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পোর্ট লুইস সিটি কাউন্সিলর লর্ড মেয়র মাহফুজ মুসা কাদের সাইব, স্থানীয় সংসদ সদস্যগণ, ডিপ্লোমেটিক কোরের প্রতিনিধিবৃন্দ, সিভিল সোসাইটি, প্রবাসী বাংলাদেশিবৃন্দ এবং বাংলাদেশ প্রান্তে সরাসরি যুক্ত হন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র, পররাষ্ট্র সচিব, বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের কিউরেটর এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ। অনুষ্ঠান শেষে মুজিব বর্ষের লোগো সম্বলিত রঙিন বেলুন অবমুক্ত করা হয়।