মাইকে ঘোষণা দিয়ে আ.লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ২০
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে স্কুলের ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে আওয়ামী লীগের দুগ্রুপের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয় পক্ষের ২০ জন আহত হয়েছেন। এ সময়ে ঘটনাস্থল থেকে একজনকে আটক করা হয়েছে। এনটিভি অনলাইনকে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছে কুমারখালী থানা পুলিশ।
পুলিশ জানায়, গতকাল সোমবার দুপুর পর্যন্ত কুমারখালী উপজেলার পান্টি ইউনিয়নের সান্দিয়ারা বাজার ও বশীগ্রাম সেতু এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় বেশ কয়েকটি বাড়িঘরে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে উভয়পক্ষের সমর্থকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
পুলিশ আরও জানায়, দীর্ঘদিন ধরে জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি জাহিদ হোসেন জাফরের সঙ্গে পান্টি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সামিউর রহমান সুমনের বিরোধ চলছিল। গত রোববার পান্টি ডাঁসা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনে সামিউর রহমান সুমন সমর্থিত প্যানেল জয়লাভ করে। এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা চলছিল।
নির্বাচনে জয়ী গোলাম নবী সোমবার সকালে সান্দিয়ারা বাজারে জাহিদ হোসেনের সমর্থক শরীফুল ইসলামকে কটুক্তি করেন বলে অভিযোগ ওঠে। তখন শরীফুলের লোকজন গোলাম নবীকে পিটিয়ে আহত করে। এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
তখন উভয় পক্ষের লোকজন মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে দেশীয় অস্ত্র রামদা, ঢাল, লাঠি ও ইটপাটকেল নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে উভয়পক্ষের কমপক্ষে ২০জন আহত হয়। আহতদের মধ্যে ১০ জনকে কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে জাহিদ হোসেন জাফর জানান, স্কুলের নির্বাচন ও পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এ ঘটনা ঘটেছে। আমি এলাকার বাইরে আছি। তবে উভয়পক্ষই আওয়ামীলীগের কর্মী ও সমর্থক।
এ বিষয়ে সামিউর রহমান সুমন জানান, স্কুল কমিটির নির্বাচনে আমার প্যানেল জয়লাভ করে। সকালে জয়ী গোলাম নবীকে সান্দিয়ারা বাজারে প্রতিপক্ষের লোকজন পিটিয়ে আহত করে। এরপর দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
জাহিদ হোসেনের সমর্থক শরিফুল ইসলাম জানান, সামিউরের নেতৃত্বে প্রতিপক্ষের লোকজন আমাকে কটূক্তি করেন। তাঁরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করলে আমাদের লোকজন তা প্রতিহত করে। তখন আমাদের বেশ কয়েকজন আহত হন। এ সময় বাড়িঘর দোকানপাটে ভাংচুর ও লুটপাট চালানো হয়।
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার জানান, স্কুলের ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে উভয়পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়। এ ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
ওসি আরও জানান, হামলার শিকার একজন থানায় মামলা করেছে। মসজিদের মাইকের ঘটনার ব্যাপারে তিনি জানান, ঘটনাটি শুনেছি। এ ব্যাপারে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।